Saturday, 24 August 2013

বিষয়-নাহী


 ভূমিকা

উসূলে ফিকহে নাহী হল খাসের অন্যতম একটি অংশ। এটি হল আমরের বিপরীত শব্দ। এর দ্বারা কোন কিছুকে না আবশ্যক করা হয়। উসূলশাস্ত্রে আমরের ন্যায় নাহীর গুরুত্ব রয়েছে। নাহীর দ্বারা আল্লাহ কর্তৃক বান্দার উপর কর্মের নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়। নিম্নে নাহী সম্পর্কে সুবিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলঃ

নাহীর আভিধানিক অর্থ

নাহী হল ফাতায়ার মাসদার যার অর্থ হল নিষেধ করা,দূরে রাখা, বিরত রাখা, ধমক দেওয়া, অবৈধ করা। Dictionary of Modern Arabic এ বলা হয়েছে,
Ban, Prohibiton,Interdiction etc.

পারিভাষিক সংজ্ঞা

আল মানার গ্রন্থাগার আল্লামা নাসাফী(রঃ) বলেন,
বক্তা নিজেকে অন্যের উপর উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন মনে করে কাউকে কর না বলে কোন কাজে বাধা দেওয়া হল নাহী।
আল্লামা নিযামুদ্দীন শাশী বলেন,
বক্তা অন্য কাউকে কর না বা করবে না বলে কোন কাজ থেকে বিরত রাখাকে নাহী বলা হয়।
মুজামুল ওসীত প্রণেতা বলেন,
নাহি হল না সুচক কোন শব্দ কামনা করা
কেউ কেউ বলে থাকেন যে,
অধীন থেকে কোন কাজ বর্জন করার দাবী করাকে নাহী বলা হয়।
অর্থাৎ, নাহী হল এমন জিনিস কামনা করা যেটা বক্তা নিজেকে বড় মনে করে সেটাকে না করার আদেশ প্রদান করা।

নাহি দুই প্রকার

১. সত্ত্বাগত মন্দ
২. আনুষংগিক কারণে মন্দ
এদের ব্যাপারে বিস্তারিত বর্ণনা নিম্নে দেওয়া হলঃ
১.সত্ত্বাগত মন্দ
 ইহা দুই প্রকার। এক প্রকার হল বিবেক বুদ্বির দ্বারা শরীয়াতের নির্দেশ ছাড়া মন্দ মনে করা।যেমনঃমদ খাওয়া,যিনা করা,অত্যাচার করা ইত্যাদি বিবেল দ্বারা সাব্যস্ত হয় খারাপ হিসেবে।
 আরেকটি হল  শরীয়াতের নিষেধাজ্ঞার জন্য মন্দ। যেমনঃ স্বাধীন ব্যক্তিকে বিক্রয় করা এটির অন্তর্ভূক্ত।যদি তা শরীয়াত দ্বারা নিষেধ না করা হত তাহলে তা সাধারণ বিবেকের দ্বারা হারাম মনে হত না।এটা শরীয়ারতের জন্য এবং বিবেকের কারণে মন্দ।সুতরাং, এটি একটি মৌলিক দোষ।
২. আনুষংগিক কারণে মন্দ
এটি আনুষংগিক বা বিশেষ কারণে নিষিদ্ব হয়েছে। এটি সত্ত্বাগতভাবে নিষিদ্ব নয়। এটি আবার দুই ভাগে বিভক্ত যার এক প্রকার হল বিবেক বুদ্বির দ্বারা শরীয়াতের নির্দেশ ছাড়া মন্দ মনে করা।যেমনঃ কুরবানীর দিন,ঈদের দিন রোযা রাখা যা মানুষের জ্ঞানে ধরা হয়।
 আরেকটি হল  শরীয়াতের নিষেধাজ্ঞার জন্য মন্দ। যেমনঃ জুমার আযানের সময় ক্রয়-বিক্রয় করা।এটি বৈধ কিন্তু জুমার আযানের জন্য তা বৈধ নয়। আল্লাহ বলেন,
মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। [জুমআঃ৯]

হুকুম 

এটার উপর নিষেধাজ্ঞার বিধান জারী হওয়ার পরে এটা মৌলিকভাবে কোন দোষের কারণ নয়।এটি অন্য একটি বস্তুর কারণে এটি দোষের হয়। এগুলো পারতপক্ষে উত্তম কাজ।যেমন রোযা রাখা,নামায,ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি।কিন্তু তা বিশেষ কারণে রহিত হয়। উদাহরণস্বরুপ, ঈদের দিন রোযা রাখা। জুমার আযানে ক্রয়-বিক্রয় করা,মাকরুহ ওয়াক্ত নামায পড়া।

উপসংহার


পরিশেষে বলা যায় যে, আমর দ্বারা কোন কিছুকে আবশ্যক যেমন করা হয় নাহী দ্বারা কোন বস্তুকে নিষিদ্ব করা হয়। নিষিদ্ব বস্তু থেকে বেচে থাকা ঈমানের দাবী।

No comments:

Post a Comment

৩৮ তম বিসিএস এর রেজাল্ট

৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে পিএসসি। বাংলাদেশ কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক এ কথা নিশ্চিত করেন। ...