ভূমিকা
খৃষ্টীয় পূর্ব ৬ষ্ঠ শতক
শতাব্দীতে ভারতীয় উপমহাদেশে গৌতম বুদ্বের
আবির্ভাব ঘটেছিল। যখন ব্রাহ্মণগণ তাদের নিজেদের কেবল শ্রেষ্ঠ বলে দাবী করতে থাকল
তখন ক্ষত্রিয় যুবকগণ নতুন ধর্ম আবির্ভাবের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তাদের ভিতর গৌতম
বুদ্ব একজন যার দ্বারা বৌদ্ব ধর্মের জন্ম হয় এবং অতি স্বল্প সময়ে তা চারিদিকে
ছড়িয়ে পড়েছিল। তার দর্শন নিয়ে আজ অবধি সকলে চিন্তা-গবেষণা করে থাকে। তাই Albertec Weber বলেন,
Buddah was a simple moralist and social
reformist.
জন্ম ও পরিচয়
গৌতম বুদ্বের জন্ম তারিখ নিয়ে
ঐতিহাসিকদের ভিতর কোন মতৈক্য নেই। কোন কোন দার্শনিক এই অভিমত ব্যক্ত করেছে যে, তার জন্ম ৬২৩ খৃষ্টাব্দপূর্ব এ হয়েছিল। এনসাইক্লোপেডিয়া
ব্রিটিনিকাতে বলা হয়েছে যে, তার জন্ম ৫৬৩তে হয়েছিল। কারণ জৈন
ধর্মের প্রবর্তক মহাবীরের চেয়ে সে ৩৬ বছরের বড় ছিলেন এবং মহাবীরের জন্মসাল হক
খৃষ্টপূর্ব ৫৯৯ তে। সাধারণত বেশীরভাগ ঐতিহাসিক ৫৬২ খৃষ্টাব্দকে পূর্বকে প্রকৃত
জন্ম তারিখ ধরে তার আলোচনা করা থাকেন।
গৌতম বুদ্বের আদি নাম ছিল
সিদ্বার্থ যেই নামটি তার পিতা দিয়েছিলেন। তার পিতার নাম ছিল শুদ্বোদন এবং মাতার
নাম ছিল রাণী মহামায়া। শুদ্বোদন উত্তর ভারত ও তিব্বতের মধ্যকার রাজ্য কপিলাবস্তের
রাজা। দীর্ঘদিন যাবৎ তার স্ত্রীর কোন সন্তান হচ্ছিল না।রাজার বয়স যখন ৫৬ হয় তখন
পর্যন্ত কোন সন্তান তিনি লাভ করেন নাই।সন্তান পেটে আসার পর মহামায়া স্বপ্নে দেখেন
যে, চারজন দেবতা এসে মহামায়ালে পালংকে টেনে
নিয়ে যাচ্ছেন হিমালয়ের দিকে। শ্বেতপদ্ম শুণ্ডে ধারন করে এক জ্যোতির্ময় শ্বেতহস্তী
তার কোলে প্রবেশ করছে। তিনি ঘুম ভেংগে গেল। তারপর রাজার কাছে সব ঘটনা খুলে বললেন।
রাজা শুনে তিনি জ্যোতিষীদের ডাকলেন। জ্যোতিষীগণ তাকে এই ইংগিত দিলেন যে, আপনার স্ত্রীর গর্ভে এক সুসন্তান আসবে এবং সে হবে এক মহাপুরুষ।
অনেকদিন পর যখন তার পেটে সন্তান
আসে তখন সে নিয়মানুসারে তার পিত্রালয় গমন করছিল।তার সাথে ছিল বোন ও এক গৃহপচারিকা।
কপিলাবস্তু থেকে ২৪ মেইল দূরে নেপালের লুম্বিনী নামক স্থানে তার মা মহামায়া প্রসব
করেন। গৌতম বুদ্বের যেই গোত্রে জন্ম হয় তা হল শাক্য গোত্র। তারা জাতিতে ছিল
ক্ষত্রিয় বংশোদ্ভূত।
লুম্বিনী ছিল এক গভীর অরণ্যক এক
স্থান। সেখানে এক শালগাছের নীচে এক আষাঢ়ী পূর্ণিমার রাতে তার জন্ম হয়। প্রবাদ আছে
যে, মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার সাথে সাথে
দেবরাজ ইন্দ্র তাকে নিজ হাতে গ্রহণ করেন এবং তার হাত থেকে বুদ্ব লাফিয়ে পড়ে সাত পা
সামনে-পিছনে হেটেছিলেন।
নামকরণ ও শৈশবকাল
বুদ্বের জন্মের পর পর রাজা
শুদ্বোদনের রাজ্যের সকলের আর্থিক অবস্থা ভাল হয়েছিল বলে, রাজা তখন তার নাম রাখে সিদ্বার্থ। সিদ্বার্থ অর্থ হল
সার্বিকভাবে সাফল্য লাভ করা এবং লক্ষ্যার্জনে সমর্থ হওয়া।আবার কেউ কেউ বলে থাকেন
যে, তার নামকরণ জ্যোতিষীদের ভবিষ্যৎ বাণীর দ্বারা করা হয়।
তাকে শাকুমণি বলেও ডাকা হত। যার অর্থ হল শাক্যদের প্রাজ্ঞ। শাক্যের লোকেরা তাকে
এভাবে শ্রদ্বা করে এ নামেই ডাকত। বুদ্বের জন্মের সাতদিনের মাথায় তার মা মহামায়া
মারা যান। তখন থেকে তিনি তার বিমাতা মহাপ্রজাপতি গৌতুমীর কাছে লালিত-পালিত হতে
থাকেন। যার ফলে তার নাম গৌতম সিদ্বার্থ হিসেবে অভিহিত করা হয়। আবার কারও মতে,
গৌতম তার গোত্রের উপাধি এরজন্যে তিনি এই পরিচিতি লাভ করেছিলেন।
রাজা শুদ্বোদনের সংসারে জন্মগ্রহণ
করার পরে তার ব্যাপারে মহাঋষীগণ এই ভবিষৎ বাণী প্রদান করেছিলেন যে তিনি একদিন
অসামান্য পুরুষরুপে জগৎ আলোকিত করবেন এবং এক শক্তিশালী ধর্মের প্রবর্তকের ভূমিকায়
আবির্ভূত হবেন। এর পাশাপাশি এই কথটিও বলেছেন যে, যে দিন সে জরাজীর্ণ বৃদ্ব মানুষ, রোগ্রান্ত মানুষ,মৃতদেহ ও সন্ন্যাসী দেখবে সেইদিন সে তার রাজ্য ছেড়ে চলে যাবে।একথা শুনের
তার পিতা তখন যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।তার পিতা পুত্রকে তার যথার্থ
উত্তরসরি করার প্রয়াস গ্রহণ করেছিলেন। তিনি তার পুত্রের জন্য তিনটি প্রাসাদ
নির্মাণ করেছিলেন। নয় বছর পর্যন্ত তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে পৈতা পড়ানো হয়। বিদ্যা
শিক্ষার জন্য রাজপ্রসাদ সংলগ্ন বিদ্যাপীঠে পাঠানো হয়। বিশ্বমিত্র ছিল তার প্রধান
শিক্ষক।তিনি সিদ্বার্থের অগাধ পাণ্ডিত্য দেখে মুগদ্ব হয়ে যান। তাকে নতুন করে দৈব
শক্তি আর শিখাতে হয় নাই।বরং এই ব্যাপারে তার আগেই অনেক জ্ঞান লাভ হয়ে যায়। কারণ
সিদ্বার্থ ছোটবেলা থেকেই চিন্তাশীল এবং বৈরাগ্যশীল ছিলেন। তিনি একবার যা মুখস্ত
করতেন তাই তিনি মুখস্ত করে ফেলতেন। তীর-ধনুক চালানো, তরবারী
চালানো তাকে শিখানো হয়। ক্রমে ক্রমে তাকে ঘোড়া চড়া, শিকার
শিখানো হয়।একবার দেবদত্ত যেই হাসটি তীরবিদ্ব করেন সেটি তখন বুদ্ব নিজে সেই হাঁসটি
তার প্রাণ রক্ষার জন্য চেষ্টা করে এবং তাকে শুশ্রুষা শুরু করে। এরপর দেবদত্ত
হাসটিকে তার নিজের বলে দাবী করলে বুদ্ব তার সামনে এই যুক্তি স্থাপন করে সে যেহেতু
হাসটির প্রাণ রক্ষা করেছে তাই হাসটি তার।
কৈশোরকাল ও বিবাহ
কিশোর সিদ্বার্থ যৌবনকালে পদার্পণ
করেন এবং ক্রমেই তার ভিতর এক জীবন উন্মাদনার সৃষ্টি হয়।তার পিতা শুদ্বরাম ছেলের এই
অবস্থাকে দেখে দ্রুত কারও সাথে বিবাহ দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এক অনুষ্ঠানে
এভাবে করে অসংখ্য কুমাড়ী মেয়েকে একত্রিত করা হয়। সেখানে রাজা পরবর্তীতে যশোধারার
সাথে সাক্ষাৎ করান। তখন তিনি গৌতমের সাথে যশোধারের ১৬ বছর মতান্তরে ১৯ বছর বয়সে বিবাহ প্রদান
করেন।রাজা তখন তাদের সুখী দাম্পত্য জীবন নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে একেবারে
পরিপূর্ণভাবে সাজিয়ে দেন।তাএর জন্য একটি পৃথক প্রাসাদ করা হয়। রাজা তার পুত্রের
রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এই নির্দেশ প্রদান করলেন যে, কোন বাসি ফুল,ঝড়া পাতা বা রুগ্ন ব্যক্তি যেন তার
সামনে না পড়ে। অতঃপর তাদের ঘরে এক ফুটফুটে পুত্র সন্তান রাহুল জন্মগ্রহণ
করেন। তবুও সিদ্বার্থকে সংসারের প্রতি
বিরাগী করা যায় নাই। তার একদিন মনে ভ্রমণের ইচ্ছা জাগে। অতঃপর তিনি ভ্রমণের জন্যে
বের হলেন সারথী ছন্দককে নিয়ে। তিনি পরপর চারদিন ভ্রমণে চার ধরনের মানুষ দেখতে পান।
একদিন এক বৃদ্ব,এরপর এক অসুস্থ, এরপর
এক মৃত এবং তারপর একদিন এক সন্ন্যাসী। এদের ব্যাপারে যখন তিনি দেখেন তখন তাদের
ব্যাপারে সারথীর কাছে জানতে চান এই অবস্থা কি সবার হবে? তখন
সারথী উত্তর দিলেন তাদের সকলের অবস্থা এমন একদিন হবে? এই সব অবস্থা
দেখে তার মনে আর শান্তি থাকল না।
গৃহ ত্যাগের জন্য সংকল্প
তারপর তিনি তার পিতার কাছে এই
বিষয়টি অবহিত করলেন যে, তিনি আর প্রসাদে
বিলাস-বহুল জীবনে থাকবেন না,তিনি এখন থেকে সন্ন্যাসবাদী
জীবন-যাপন করবে যার দ্বারা প্রকৃত শান্তি লাভ করতে সক্ষম হবে। কিন্তু তার পিতা
তাকে তার রাজ্য দেখার জন্য অনুরোধ জানায়।কিন্তু গৌতম তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি
জানায় এবং তার পিতাকে জানিয়ে দেয় যদি তাকে এই আশ্বাস দেয় যে, তার কোন দিন মৃতু হবে না,কোনদিন তার অসুখ হবে না এবং
কোন দিন তিনি বৃদ্ব হবেন না তাহলে তিনি তা করতে পারবে।তখন তার পিতা আর কোন উত্তর
দিতে পারলেন না।তখন বুদ্ব তার স্বীয় প্রাসাদে চলে যান। সেইদিন রাতে তার পুত্র
রাহুল ও স্ত্রী যখন ঘুমিয়ে ছিল তখন তিনি তার গৃহ ত্যাগ করে চলে যান ২৯ বছর বয়সে।
গৃহ ত্যাগের পর তার জীবন
এরপর তিনি অনেকদিন পর্যন্ত নানা
দিকে ঘুরা ফেরা করছিলেন। এমতাবস্থায় তিনি অনোমা নদীর তীরে এসে দাড়ালেন।সারথী
ছন্দককে ছেড়ে তিনি দূর অন্ধকারে হারিয়ে যান। রাজা হয়ে যান রাজর্ষী। লজ্জা নিবারণের
জন্য কেবল একখানা কাপড় ব্যবহার করেন।
জগতের দুঃখ ও ক্লেশ নিবারণের জন্য
তিনি বেছে নেন কঠোর সাধনা ও পরিভ্রমণের পথ। দুঃখ ব্যতীত আর কিছুই নেই এই কথাকে
মাথায় রেখে তিনি দুঃখকে দমন করার জন্যে কি উপায় আছে তা নিয়ে তিনি এক গভীর
ধ্যান-সাধনায় নিমজ্জিত হন। তিনি অতঃপর আড়ার কালাম এবং উদ্রক রামপুত্রে কাছে থেকে
তাপস্ব বিদ্যা লাভ করতে চাইলেও তিনি তার তৃষ্ণাকে সেই সময় মিটাতে পারেন নাই। এরপর
তিনি নিজেই কঠোর কৃষ্ঠ সাধন ও ধ্যান-নিমগ্নে নিয়োজিত হলেন। তার সাথে পাচজন শিষ্য
সর্বদা ছিল। এরপর তারা ভারতের বিহারের গয়া প্রদেশ আসলেন। সেখানে উরুবিল্লে
খাওয়া-দাওয়া ত্যাগ করে তাপস্য শুরু করলেম যে,মানবজীবনে
কীভাবে দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ করা যায়।কিন্তু বুদ্ব ক্রমানয়ে অসুস্থ হয়ে যান অতঃপর
তিনি তখন থেকে খাও্য়া দাওয়া পুনরায় শুরু করেন এবং শক্তি ফিরে পান।তখন তার এই
অবস্থা দেখে তার শিষ্যরা সুনজরে দেখলেন না।তারা তখন ত্যাগ করে চলে যান। তার
শিষ্যরা হলেন বপ্প,ভদ্দিয়,মহানাম,অশ্বজিৎ কৌন্ডিন্য। সিদ্বার্থ সেখানে তপস্যা করতে থাকেন। তিনি কেবল হাতে
পাত্র নিয়ে কারও কাছে ভিক্ষা চাও্য়া ছাড়াই ভিক্ষা করতে থাকেন।এভাবে করে তার জীবন
চলতে থাকে।
প্রশ্নের উত্তর লাভ
এভাবে করে অনেকদিন কেটে যেতে
থাকে।এমতাবস্থায় দীর্ঘ ছয় বছর পর ৩৫ বছর বয়সে এক পূর্ণিমার তিথিতে ধ্যান-নিমগ্ন
অবস্থায় তার পূর্ব জন্মের বিভিন্ন দিক-নির্দেশ অবলোকন করেন।তিনি আরও দেখলেন যে, ভাল ও মন্দ এর ফলে প্রতিবার সকলের জন্ম হয় এবং পুনর্জন্মকে
অগ্রগতি করেছে। শেষ পর্যন্ত দেখতে পারলেন যে, পারমার্থিক
সীমাবদ্বতা থেকে উঠে তিনি বাসনা,ঘৃণা, ক্ষুধা,
তৃষ্ণা,ক্লান্তি, ভয়,
সন্দেহ এবং বিভ্রমকে মাড়িয়ে পৌছতে পেরেছেন এমন এক স্তরে যার দ্বারা
তিনি পরিশুদ্বতা অর্জনের মধ্য দিয়ে প্রজ্ঞা লাভ করতে সক্ষম হন। তিনি বিহার রাজ্যের
গয়া থেকে সাত মাইল দুরে বৃদ্বগয়া নামক স্থানে নিরঞ্জনা নদীর কূলে এক অশ্বত্থ তলায়
ধ্যানে নিমগ্ন হয়ে সম্বোধি জ্ঞান লাভ করেন।তিনি প্রথম রজনীতে সিদ্বার্থের জ্ঞান
লাভ করেন,২য় প্রহরীতে তিনি দিব্যচক্ষু লাভ করেন এবং ৩য়
প্রহরীতে তিনি জন্ম,জ্বরা ও ব্যাধি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ
করলেন। এবং জগতের সংসারে পরিচিত হন।তিনি যেই গাছের নীচে বস আরাধনা করতে থাকেন সেই
গাছটির নাম ছিল বোধিবৃক্ষ।এলাকাটি বোধিগায়া নামে পরিচিত ছিল।তখন থেকে তিনি গৌতম
বুদ্ব নামে।গৌতম বুদ্ব তার জীবন ত্যাগ করে মধ্যম পথের অনুসারী হন যে পথে অগ্রসরমান
থাকলে দুঃখকষ্টকে জয় করে নির্বাণ লাভ সম্ভব হয়। অবাঞ্ছিত দুঃখ থেকে মুক্তি পাওয়াকে
বুদ্ব বলেন নির্বাণ।
গৌতম বুদ্বের শিক্ষা
তিনি দুঃখ সম্পর্কে যেই মতামত
ব্যক্ত করেন তা হল এমন যে, মানুষের জীবন
দুঃখময় আর এটা প্রকৃত সত্য। এটা প্রথম আর্যসত্য। আর দুঃখ থেকে দুঃখ উৎপন্ন হবে।এটি
হল ২য় আর্য সত্য। তৃষ্ণার বিনাশ করে দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ হল ৩য় আর্যসত্য। তৃষ্ণার
বিনাশ করে দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ করতে হবে। এরজন্য মধ্যমনীতি অবলম্বণ করতে হবে। আর
মধ্যমনীতি অবলম্বণ হল সৎ ভাবে জীবন-যাপন করা। এটি হল চতুর্থ আর্যসত্য। এভাবে করে
গৌতম বুদ্ব তিনি তার প্রশ্নের উত্তর খুজে পান। বৌদ্ব ধর্মের আর্যসত্যকে বুঝবার
জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানের চার নিদানের সাথে তা তুলনা করে যাতে পারে। তা হল রোগ,রোগের কারণ, উপশম এবং উপশমের উপায়। এখানে রোগ হল
দুঃখ, রোগের কারণ হল দুঃখের কারণ, উপশম
হল দুঃখ থেকে মুক্তি এবং উপশমের উপায় হল দুঃখ থেকে মুক্তির উপায়।
গৌতম বুদ্বের সমগ্র দর্শন এই চার
আর্যসত্যের মধ্য নিহিত। একবার শরিপুত্র বুদ্বের ধর্মে দীক্ষীত হওয়ার জন্য অস্ত্রজি
ভিক্ষুর কাছে আসেন। তার কাছে বুদ্ব ও তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুদ্ব ইহার কারণ ও উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
দুঃখ আছে এবং তাই হল প্রথম ও
প্রধান সত্য। এই দুঃখ বার্তুলাকার অর্থাৎ, জন্মের পর মৃত্যু, মৃত্যুর পর জন্ম আবার জন্মের পর মৃত্যু।
দুঃখ মুক্তির উপায় বা মধ্যমপন্থা
আর মধ্যমপন্থার মাধ্যমে তার
প্রশ্নের উত্তর খুজে পাওয়া যায়। মধ্যমপন্থা হল ইন্দ্রিয় সন্তুষ্টির বা অতিরিক্ত
ভোগবিলাস এবং কঠোর কৃচ্ছতা সাধন এ উভয় পথকে বর্জন করা। এছাড়া মধ্যমপন্থা বলতে
বুঝায় ইন্দ্রিয়পরায়ণতা ও বৈরাগ্যের মধ্যবর্তী পথ। বুদ্ব বলেন,
সতর্কতা ও সম্পর্কহীনতার
মধ্যবর্তী সৎ ও সরল পথ হল মধ্যমপন্থা। এই মধ্যমপন্থা অবলম্বণ করে যে কেউ মুক্তি বা
নির্বাণ লাভ করতে পারে। দুঃখকে নিরোধ করতে হলে একজন মানুষকে আটটি নীতি মেনে চলতে
হবে।এগুলোকে মধ্যমপন্থার উপায় বলা হয়। যা হলঃ
১। সম্যক দৃষ্টিঃ
চারটি আর্যসত্য সম্পর্কে যথার্থ
জ্ঞান হল সম্যক দৃষ্টি। বুদ্বের মতে অবিদ্যা হল দুঃখের কারণ। অবিদ্যা থেকে জগৎ ও
জীবন সম্পর্কে মানুষের মিথ্যা জ্ঞান জন্মে। দুঃখের উৎপত্তি সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান
ছাড়া মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। জ্ঞান একমাত্র আর্যসত্যগুলো সম্পর্কে যথার্থ
জ্ঞানার্জনে সহায়ক। সম্যক দৃষ্টি ব্যক্তির মুক্তির সাধনে অপরিহার্য। সম্যক দৃষ্টি
দুই প্রকার। যা হল লৌকিক এবং লোকাত্তর।ভাল ও মন্দের ব্যবধান হল জ্ঞান হল সম্যক
দৃষ্টি।উলফ মার্টজ মনে করেন,
সম্যক জ্ঞান হল চারটি আর্যসত্য
সঠিকভাবে জানা।
২। সম্যক সংকল্পঃ
গৌতম বুদ্ব এই অভিমত পোষণ
করেছিলেন যে, আর্যসত্য থেকে মুক্তি লাভের
জন্য শুধুমাত্র জ্ঞান লাভ করলে হবে না বরং তার জন্য ইচ্ছা তথা সংকল্প থাকা দরকার।
আর তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের নাম হল সম্যক সংকল্প। মুক্তিকামী মানুষকে ভোগ,বিলাস, আসক্তি, বিদ্বেষ ও
নিষ্ঠুরতা থেকে মুক্ত থাকতে হবে এবং প্রেম ও করুণার মাধ্যমে দৃঢ় সংকল্প থাকতে হবে।
উলফ মার্টজ বলেন,
সম্যক সংকল্প মানুষের শুভাকাংখা,শান্তির আচরণের দিক-নির্দেশনা জ্ঞাপন করে।
৩। সম্যক বাক্যঃ
দঃখ জয়ের জন্য মানুষকে বাক্যসংযমী
হতে হবে। মিথ্যা বলা, চুকলি দেওয়া,পরনিন্দা করা, কটুকথা বলা ইত্যাদি থেকে নিজেদের
পূত-পবিত্র রাখা হল বাক্যসংযমী হওয়া। এ ব্যাপারে উলফ মার্টজ বলেন,
সম্যক বাক্য হল নিজেকে মিথ্যা, অপ্রয়োজনীয় কথা এবং নিন্দাবাদ থেকে বিরত রেখে সত্যবাদিতার
সাথে নিজেকে পরিচালিত করতে হবে।
৪। সম্যকসদাচারঃ
মানুষের আচার-আচরণ হবে
সম্পূর্ণরুপে শুদ্ব ও সত্যভিত্তিক। তাই একজন মুক্তিকামী মানুষকে পঞ্চশীল অনুসরণ
করতে হবে।গৌতম বুদ্বের শিক্ষার মূল ভিত্তি ছিল পঞ্চশীল। শীলের অর্থ হল মেনে চলার
পথ আর পঞ্চশীল হল প্রথম সম্বল।এই পঞ্চশীল হল নিম্নরুপঃ
কোন প্রাণীকে হত্যা করা যাবে না, কাজ করার সময় স্বার্থকে মনে স্থান না দেয়া, মিথ্যা না বলা,চুরি না করা, বুদ্বি
লোপ পাওয়ার মত কিছু না খাওয়া, মন ও শরীরকে পবিত্র রাখা।
তিনি সন্ন্যাসীদের জন্য আরও
পাঁচটি নিয়ম প্রদান করেন যা হলঃ
আহারে সংযমী, নৃত্যগীত করা যাবে না, সাজসজ্জা করা যাবে না,
বিলাসভুল শয্যা ব্যবহার করা যাবে না, কোন
সোনা-রুপা ব্যবহার করা যাবে না।
এক কথায় ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনের
সকল কাজ সদাচার ও নীতি নিষ্ঠার সাথে সম্পাদন হল সম্যক সদাচার।উলফ মার্টজ বলেন,
সম্যকসদাচার হল সকল মানবীয়
দোষ-ত্রুটি তথা খুন, চৌর্যবৃত্তি এবং
ব্যাভিচারকে নিষিদ্ব করা।
৫। সম্যকপ্রচেষ্টাঃ
মনের ভিতর থেকে কুচিন্তার বিনাশ
সাধন, মনের ভিতর সৎ চিন্তা আনা এবং তা সংরক্ষণের
চেষ্টাকে ব্যায়াম বা সম্যক প্রচেষ্টা বলা হয়। মুক্তি বা নির্বাণ লাভের জন্য এমন
কুশিক কর্ম সম্পাদনের পুনঃ পুনঃ চেষ্টা হল সম্যকচেষ্টা। উলফ মার্টজ বলেন,
সম্যকচেষ্টা বলতে বুঝায় শয়তানী
কর্মকে প্রতিহত করতে হবে এবং সৎ কর্মের বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে, যার দ্বারা প্রতিটি ব্যক্তি তার নিজস্ব চিন্তা-ধারা, কথা ও কর্মের উন্নতি ঘটাতে পারবে।
৬। সম্যক জীবিকাঃ
সদুপায়ে জীবন নির্বাহ হল সম্যক
জীবিকা। জীবনযাত্রা নির্বাহের জন্য যাবতীয় কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে পাপ ও কলষহীন
করবে। জীবন ধারনের জন্য বৃত্তি গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। অস্ত্র, প্রাণী, মাংস,নেশা
ও বিষ এই পঞ্চ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। ছলনা,অত্যচার,ব্যভিচার ও শোষণাদী সর্বসম্মতিক্রমে ত্যাগ করতে হবে। পরের জন্য অনিষ্টকর
জীবিকা বর্জন করতে হবে। উলফ মার্টজ বলেন,
সম্যক জীবিকা এমন এক ধরনের
জীবিকার সন্ধান দেয় যা অন্য কোন মানুষকে কোন ধরনের ক্ষতি সাধন করে না।
৭। সম্যক স্মৃতিঃ
দৈহিক ও মানসিক সকল অবস্থা
পর্যবেক্ষণ করার নাম হল সম্যক স্মৃতি। এই স্মৃতি মুক্তিকামী মানুষের ভিতর যেন কোন
ধরনের পাপ ও মিথ্যা না আনতে পারে সেইদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখে। সম্যক স্মৃতি
চিত্তের মোহ ও প্রসাদকে অপসারিত করে। উলফ মার্টজ বলেন,
Right mindfulness or awareness means careful consideration not giving
into the dicates of desire in thoughts, words and deeds.
৮। সম্যক সমাধি
সম্যক সমাধি হল বৌদ্ব ধর্মের সাতটি
সত্য শিক্ষাকে সুন্দরভাবে পালন করা। উপরোক্ত শিক্ষাগুলো যথাযথ উপায়ে অতিক্রম করার
পর শেষ মার্গে এসে পার্থিব চিন্তামুক্ত হয়ে তা নির্বাণ লাভে সমর্থ হবে। উলফ মার্টজ
বলেন,
সম্যক সমাধি এমন বিষয় যা একজন
পবিত্র মানুষ সবকিছুকে অতিক্রম করে অর্জন করে।
এই আটটি পথ পাওয়ার জন্য তার ভিতর
মনের প্রশান্তি থাকতে হবে।আর এরজন্যে চারটি ভাব থাকা দরকার। যা হল মৈত্রী,করুণা,প্রজ্ঞা ও উপেক্ষা।
গৌতম বুদ্বের শিক্ষার মূল ভিত্তি
ছিল পঞ্চশীল। শীলের অর্থ হল মেনে চলার পথ আর পঞ্চশীল হল প্রথম সম্বল।এই পঞ্চশীল হল
নিম্নরুপঃ
১। কোন প্রাণীকে হত্যা করা যাবে
না।
২। কাজ করার সময় স্বার্থকে মনে
স্থান না দেয়া।
৩। মিথ্যা না বলা,চুরি না করা
৪। বুদ্বি লোপ পাওয়ার মত কিছু না
খাওয়া
৫। মন ও শরীরকে পবিত্র রাখা।
তিনি সন্ন্যাসীদের জন্য আরও
পাঁচটি নিয়ম প্রদান করেন যা হলঃ
১। আহারে সংযমী
২। নৃত্যগীত করা যাবে না।
৩। সাজসজ্জা করা যাবে না।
৪। বিলাসভুল শয্যা ব্যবহার করা
যাবে না।
৫। কোন সোনা-রুপা ব্যবহার করা
যাবে না।
তিনি বৌদ্ব ভিক্ষুকদের যেসকল
বিষয়ে উপদেশ প্রদান করতেন তা হলঃ
প্রাণী হত্যা থেকে বিরত থাকতে হবে
এর মানে শুধু এই না যে, কোন প্রাণী হত্যা
করা যাবে না বরং, তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সকল ধরনের কষ্ট
প্রদান করে থেকে বিরত থাকতে হবে।
ব্যভিচার বর্জন করা, পুত-পবিত্র জীবন ধারনই হচ্ছে মানসিক প্রশান্তি লাভের একমাত্র
মাধ্যম।
নারীগণ হল মুখ্য লাভের
অন্তরায়।পার্থিব সকল সমস্যার মূলে নারী। পরবর্তীতে বৌদ্বগণ কেবলমাত্র ভিক্ষুদের
জন্য এই বিধান সমুন্নত রাখে।
সকল প্রাণী সুখী হোক, শত্রুহীন হোক, অহিংস হোক,সুখী আত্মা হয়ে জীবন-যাপন করুক।
বিদ্বেষ দ্বারা বিদ্বেষ কখনও মোচন
করা যায় না।
কাউকে কটু কথা বলবে না।
নিজের চেষ্টা দ্বারা জীবনে উন্নতি
ভাল কর।
মানুষ জন্মে নয় বরং, কর্মে ও ব্যবহারেই পরিচয়।
বোকা ব্যক্তি সর্বদা নিজেকে
জ্ঞানী মনে করে।
জ্ঞানীগণ অল্প অল্প করে পূণ্য
সন্ধান করে,
যিনি ন্যায়ের পথে থাকে তাকে সকলে
ভালবাসে।
নাক,কান,জিভ,চোখ,ত্বক এই পঞ্চ ইন্দ্রিয়কে বিবেক ও বুদ্বি দিয়ে সংযতভাবে ব্যবহার করতে হয়।
ত্রিপিটিকের শিক্ষা
বুদ্ব ধর্মের গ্রন্থের নাম হল
ত্রিপিটক। পালিতে পিটক মানে সংগ্রহ করা। এখানে বুদ্বের নীতিসমূহ তিনভাগে বিভক্ত
করা হয়েছে। যা হলঃ
১। বিনয় পিটক (অনুশাসন শিক্ষা)
২। সূত্র পিটক ( ধর্ম উপদেশ ও
আলোচনা)
৩। অভিধর্ম পিটিক (তত্ত্ববিদ্যা)
প্রতিটি পিটক অনেকগুলো খন্ডের
সমন্বয় গঠিত।
বুদ্ব বলতেন যে, কর্মের মাধ্যমে মানুষের পরিচয় পাওয়া যায় এবং কর্মই মানুষের
মূল পরিচয়। তার এই নব ধর্ম প্রচারের পর থেকে আবার তার শিষ্যগণ তার কাছে ফিরে আসতে
শুরু করে। এরা পাঁচ জন তিনবার এই কথা বলে শপথ করে যে, আমি
বুদ্বের নামে শরণ নিলাম,আমি বুদ্বের ধর্মের শরণ নিলাম আমি
সঙ্ঘের শরণ নিলাম।
বুদ্বের নিজ পিতৃভূমিতে ফিরে আসা
এরপর তারা বুদ্বের ধর্মে প্রচারে
নিজেদের আত্মনিয়োগ করে। স্বল্প সময়ে তার জনপ্রিয়তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তারপর
এক রজ্যের রাজা বিন্বিসারের বেনবুন তাদের কাছেই থাকতেন।অতঃপর তার কাছে যখন খবর আসল
যে, তার পিতা অসুস্থ ছিলেন তখন তিনি তার
জন্মস্থান কপিলাবস্তুর দিকে রওনা হন। তার পিতার সাথে তার সাক্ষাৎ হয়।বুদ্ব এর পিতা
তার ছেলের পীত বর্ণের বস্ত্র, মুণ্ডন মাথা, হাতে ভিক্ষার পাত্র দেখে বিস্ময়ভূত হয়ে উঠেন এবং বুঝতে পারেন যে, তার সামনে যে দাড়ানো আছে সে কোন সাধারণ মানুষ নয় বরং এক মহাজ্ঞানী।এর
কিছুদিন পর তার পিতা ৯৭ বছর বয়সে মারা যান।
বৌদ্ব ধর্মের প্রচার
বুদ্বের স্ত্রী গোপাদেবী এবং
পুত্র রাহুলকে বৌদ্বধর্মে দিক্ষিত করেন।বুদ্বের পিতার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী গৌতমী
বুদ্ববাদকে গ্রহণ করেন এবং গৌতম বুদ্ব তাদের জন্য ভিক্ষুনী সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন।তার
এক জ্ঞাতি আনন্দ।তার পরামর্শক্রমে বুদ্ব নারীদের জন্য পৃথিক সংঘ স্থাপন
করেন।প্রথমে তিনি তা প্রতিষ্ঠা করতে অসমর্থ প্রকাশ করেন কিন্তু পরবর্তীতে তিনি তা
করেন এবং তিনি এই আশাংকা করেন যে, নারীদের এই
ভিক্ষুনী এক সময় বিপর্যয় ডেকে আনবে। পরবর্তীতে তাই হয়েছিল। কৃশা নামে এক মহিলা
বুদ্বের ভক্ত হয়ে যায় এবং তিনি ভিক্ষুনীর সংঘের সদস্যদের ভিতর তার খ্যাতি অতি অল্প
সময়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি বর্ষার তিন মাস ছাড়া বাকি পুরো সময় তিনি
ধর্ম প্রচারের জন্য বিভিন্ন স্থান ঘুরে বেড়ান। তিনি অত্যন্ত সাধারণ জীবন-যাপন
করতেন। তিনি ফল-মূল খেয়ে ও সাধারণ খাদ্য খেয়ে জীবন-ধারন করতেন। তার নিজের ঘর-বাড়ি
বলত কিছুই ছিল না। তিনি খালি পায় সর্বদা হাটতেন। তার আচার-আচরণে বিমুগদ্ব হয়ে
আঙ্গুলী মাল নামে এক ডাকাত তার ভুক্ত হয়ে যায়। তিনি বিবাদমান রাজাদের যুদ্ব বিগ্রহ
এড়িয়ে তাদের মধ্যকার শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বুদ্ব তার সাধনালব্ধ জ্ঞান
মানুষের কল্যাণে সর্বদা প্রচার করতে থাকেন। সেই সময় হিন্দুগণ যাগযজ্ঞ, পশু-বলি,জাতি ও বর্ণভেদের বিভিন্ন ধরনের
জীবন-যাপন করত। গৌতম এই সকল মিথ্যাচার এবং কুসংস্কার দূর করে সত্য ও ন্যায়ের পথ
অবলম্বণ করে আত্মশুদ্বির মাধ্যমে নির্বাণ লাভের আহবান জানান। ধর্ম প্রচাররের জন্য
তিনি যুক্তিতর্ক ও বিচার-বিশ্লেষণকে প্রধান্য দিতেন।
গৌতম বুদ্বের মৃত্যু
বুদ্ব প্রায় দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে ভারতের বিভিন্ন
গ্রামে ও জনপদে ভ্রমণ করে স্বীয় ধর্ম প্রচার করতে থাকে। কুশিনগরের মল্লদের শালবনে
একজোড়া শালবৃক্ষের মধ্যস্থলে উত্তরদিকে মাথা রেখে এক বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে ৮০
বছর বয়সে ৪৮৩ খৃষ্টপূর্বে তিনি মহানির্বাণ
লাভ করেন।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায় যে, গৌতম বুদ্ব একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। একাধারে তিনি একজন
একজন মহাজ্ঞানী, দার্শনিক,বৈজ্ঞানিক,মনস্তাত্ত্বিকবিদ,মানবতাবাদী এবং বিশ্বব্লিপবী সমাজ
সংস্কারক ছিলেন। Encyclepadia of Religion এ বলা হয়েছে,
Buddism is not an orthodox religion but also
a way to normal life.
No comments:
Post a Comment