Saturday, 24 August 2013

বিষয়-কিতাবুল্লাহ

ভূমিকা

আল-কুরআন তথা কিতাবুল্লাহ হল মানব জাতির মুক্তির মূল সনদ।এর উপর আমল করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য ফরয। তাই কিতাব সম্পর্কে আমাদের সকলের জানা উচিৎ।এই কিতাব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা নিম্নে করা হলঃ

কিতাবের আভিধানিক অর্থ

কিতাব আরবী শব্দ যা ফিআলুন এর ওযনে বাবে নাসারা মাসদার।এর আভিধানিক অর্থ বিভিন্ন অর্থে বিশ্লেষণ করা যায়ঃ
একত্রিত করা,অংকন করা,লিপিবদ্ব করা ইত্যাদি। কুরআনে এই শব্দটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।যা হলঃ
আবশ্যক করা, গণনা করা,নির্দিষ্ট সময় অর্থে, কর্মফল অর্থে,মহিলার ইদ্দতার্থে ইত্যাদি।এখানে শাব্দিক অর্থে কিতাব বলে লিখিত গ্রন্থের উদ্দেশ্যে আর তা হল আল-কুরআন।

কিতাবুল্লাহের পারিভাষিক সংজ্ঞা

কিতাবুল্লাহের সংজ্ঞা বিভিন্ন মনীষীবৃন্দ বিভিন্নভাবে প্রদান করেছেন। তন্মধ্যে মানার গ্রন্থাগার আল্লামা আবুল বারাকাত আন নাসাফী(রঃ) বলেন,
কিতাব হল রাসূল(সাঃ) এর উপর অবতারিত কুরআন, যাকে মাসহাফে লিপিবদ্ব করা হয়েছে যা রাসূলুল্লাহ(সাঃ) এর পক্ষ থেকে সন্দেহাতীতভাবে ধারাবাহিক পন্থায় বর্ণিত।
জালালুদ্দীন সুয়ূতী(রঃ) বলেন,
কিতাব হচ্ছে কুরআন যা রাসূল্লাহ(সাঃ) এর উপত নাযিল হয়েছে এবং যা ধারাবাহিক বর্ণনায় বর্ণিত এবং ইবাদতের সময় তিলওয়াত করা হয়।
আল্লামা আব্দুল ওহাব বলেন,
কুরআন হল আল্লাহর কথা যা রুহুল আমীনের মাধ্যমে মুহাম্মদ ইবন আব্দুল্লাহ(সাঃ) এর উপর নাযিল হয় আরবী ভাষায় নাযিল হয়।
কতিপয় উসূলবিদ্গণ বলেন,
কিতাব হল আল-কুরআন যা আল্লাহর সর্বশেষ ওয়াহী যা সুদীর্ঘ ২৪ বছর মানবজাতির প্রয়োজনানুসারে অল্প অল্প করে মুহাম্মদ(সাঃ) এর উপর নাযিল করা হয়। 

উপকারিতা

মানার গ্রন্থাগার কিতাবের যেসকল শর্ত দেওয়া হয়েছে নিম্নে তার উপরকারিতাসহ শর্তসমূহ উল্লেখ করা হলঃ

১। কুরআনঃ এখানে কুরআনে শব্দটি যদি প্রসিদ্ব কোন কিতাবের নাম হয় তাহলে এটা শাব্দিক পরিচিতি হবে।পরবর্তী শব্দ মুনাজজাল থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত প্রকৃত পরিচিতি হবে।কিন্তু কুরআন শব্দটি যদি পঠিত অর্থ ধরা হয় তাহলে শব্দটি একটি জাতিবাচক বুঝা যায়।

২। মুনাজ্জালঃ এ শব্দ দ্বারা আসমানী কিতাব ব্যতীত অন্যান্য সকল কিতাব যা মানব রচিত তা বাদ দেওয়া হয়েছে। যেমনঃ গীতা,রামায়ণ,মহাভারত ইত্যাদি।

৩। আলার রাসূলঃ এ শব্দের দ্বারা মুহাম্মদ(সা) ব্যতীত অন্যান্য সকল নবী ও রাসূলের উপর নাযিলকৃত আসমানী কিতাবসমূহকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যেমনঃ তাওরাত,যাবূর,ইঞ্জীল ইত্যাদি।

৪। আল মাকতুব ফিল মাসাহিফঃ এখানে মাসাহিফ শব্দটির আলীফ লাম যদি আহদী হয় তবে এর দ্বারা সেইসব আয়াত কিতাব থেকে বাদ পড়ে যাবে যেইসব আয়াতের তিলওয়াত রহিত হয়েছে কিন্তু তার হুকুম এখনও বিদ্যমান। যেমনঃ বৃদ্ব নারী বা বৃদ্ব পুরুষ যদি ব্যভিচার করে তাহলে তাদের পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা কর।

৫।আল মানকুল আনহু নাকলাম মুতাওতিরানঃ এ শর্ত দ্বারা ধারাবাহিক বর্ণনা না হওয়ার কারণে মাসহাফে লিপিব্দ্ব না হওয়া আয়াত বের হয়ে যাবে। যেমনঃ রমানের রোযা রাখার ব্যাপারে উবাই ইবন কাবের কিরাআতঃ
তোমরা কাযা রোযাগুও ধারাবাহিকভাবে আদায় করবে।
ঐসকল কিরাআত বাদ দেওয়া হয়েছে যা খবরে মাশহুরের অন্তর্ভূক্ত।কসমের কাফফারা সম্পর্কিত হিসবে পর পর তিনদিন রোযা রাখা হবে এ ব্যাপারে আয়াত ছিল কিন্তু পরবর্তীতে তা রহিত হয়ে যায়।

৬। বিলা সুবহাতিনঃ এ শব্দটি নিয়ে উসূলবিদ্গনের ভিতর মতবিরোধ রয়েছে। জমহুর উলামাগণ বলেন,এ শব্দটি দ্বারা মুতাওয়াতিরের উপর তাগিদ করা হয়েছে।  কারণ তা সন্দেহতাতীতভাবে হয়।কিন্তু ইমাম খাশশাফ এর মতে শব্দটি দ্বারা খবরে মাশহুর পন্থায় বর্ণিত আয়াতসমূহ বের হয়ে গিয়েছে।আবার কারও কারও মতে, এ শব্দটি দ্বারা বিসমিল্লাহকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কারণ তা কুরআনের আয়াত হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু নুরল আনওয়ার গ্রান্থাগার বলেন, এমত বিশুদ্ব নয়। কারণ নিঃসন্দেহে বিসমিল্লাহ আল-কুরানের আয়াত।  

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায় যে, আল-কুরআন একটি বিশুদ্ব কিতাব এর ব্যাপারে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। এর নামকরণের স্বার্থকতা অবশ্যই প্রতিফলিত হয়েছে।


No comments:

Post a Comment

৩৮ তম বিসিএস এর রেজাল্ট

৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে পিএসসি। বাংলাদেশ কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক এ কথা নিশ্চিত করেন। ...