মুহকাম
মুহকাম
আরবী ভাষায় আহকামা থেকে ইসমে মাফউল।এর অর্থ মযবূত।
পারিভাষিক
অর্থ
পরিভাষার
এমন হাদীসে মাকবূলকে মুহকাম বলা হয় যা অনুরুপ হাদীসের বিরোধিতা থেকে মুক্ত।
অধিকাংশ হাদীস এই প্রকারের। হাদীসের ভিতর অতি নগণ্য সংখ্যক হাদীস পারস্পারিক
বিরোধীতার অন্তর্ভূক্ত।
উদাহরণ
রাসূলুল্লাহ(সাঃ)
ইরশাদ করেন, যে আমার উপর ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যাচার করল সে যেন আপন ঠিকানা
জাহান্নামকে বানিয়ে নেয়।
মুখতাফুল
হাদীস
ইখতিলাফ
থেকে ইসমে ফায়িল। ইত্তিকাফ এর বিপরীতার্থক শব্দ। অর্থাৎ, ঐসকল হাদীস যা আমাদের
কাছে এভাবে এসেছে যে, তার অর্থ একটা আরেকটার বিপরীত অর্থাৎ, পারস্পারিক
বিপরীতার্থক।
পারিভাষিক
অর্থ
পরিভাষায়
ঐ হাদীসকে মুখতালফুল হাদীস বলা হয় যা অনুরুপ হাদীসের সাথে পারস্পারিক
দ্বন্দ্বযুক্ত। তবে উভয় হাদীসের ভিতর সমন্বয় সাধন সম্ভব। এমন সহীহ কিংবা হাসান
হাদীস, যার সাথে সমমর্যাদাপূর্ণ অন্য কোন হাদীসের অর্থগত দ্বন্দ্ব পরিলক্ষিত হয়।
কিন্তু বিজ্ঞ আলিম ও সঠিক সমঝাদার ব্যক্তিদের পক্ষে উভয়ের অর্থের মধ্যে সমন্বয়
সাধন করে গ্রহণযোগ্যতার রুপ দেওয়া সম্ভব।
উদাহরণ
বুখারী
শরীফের এক হাদীসে বলা হয়েছে যে, রোগের ভিতর কোন সংক্রামক ব্যাধি বা কুলক্ষণ
নেই।
আবার
সহীহ মুসলিম এ উল্লেখ করা হয়েছে, “যে স্থানে কুষ্ঠু রোগ ছড়ায় সেই স্থান থেকে যেন লোকেরা
দ্রুত পালিয়ে যায় যেভাবে বাঘ দেখলে দ্রুত পালায়”।
এখন
এই হাদীসে দুটি সহীহ। এর ভিতর কোনটির উপর আমল করবে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের ভিতর
সন্দেহ থাকতে পার। এই প্রসংগে হাফিয বিন আসকালানী(রঃ) যেভাবে তার সমাধান করেছেন তা
নিম্নরুপঃ
বুখারী
শরীফে একটি হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে যে,একবার এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ(সাঃ) এর কাছে
জিজ্ঞাসা করলেন, খোসা-পাচড়াযুক্ত উটটিকে আলাদা করা দরকার কারণ তা থেকে অন্য সকল
উটের তা সংক্রমিত হতে পারে? তখন রাসূলুল্লাহ(সাঃ) বললেন, তাহলে প্রথম উটটিকে কে
সংক্রমিত করল?
এখন
দুটি হাদীসে বলা হচ্ছে যে, রোগ কোনভাবেই সংক্রমিত হতে পারে না।কিন্তু এক হাদীসে
বলা হচ্ছে যে, কুষ্ঠুরোগ ছড়িয়ে পড়লে সেখান থেকে দূরে সরে যেতে হবে। যদি সে
দূরে সরে না যায় তাহলে সে তা সংক্রমন বলে মনে করবে আর তাতে সে মন্তব্য করে বসবে
যে, এটি সংক্রমনের জন্য হয়েছে যার ফলে তাকে সেই সময়ে ঐ এলাকা থেকে সরে যেতে বলা
হয়েছে।
বিপরীত
ধর্মী হাদীসে সমন্বয় সাধন
যখন
দুটি হাদীসের ভিতর বৈপরীত্য লক্ষ্য করা যাবে সেই সময়ে তার সমাধান বের করার জন্য
আলিম-ওলামাগণ বেশ কয়েকটি নীতি অবলম্বণ করেছেন যা হল নিম্নরুপঃ
১.
যদি দুটি হাদীসের ভিতর
সমন্বয় সাধন করা যায় তাহলে দুটি হাদীসের উপর আমল করতে হবে।
২.
যদি উভয় হাদীসের ভিতর
যদি সমন্বয় সাধন করা সম্ভবপর না হয় তাহলে কয়েকটি পন্থা অবলম্বণ করা যেতে পারে যা
হল নিম্নরুপঃ
ক.
কোন হাদীসটি নাসিখ এবং
কোন হাদীসটি মানসুখ তা দেখতে হবে।এক্ষেত্রে যেটি নাসিখ হবে সেটার উপর আমল করতে হবে
আর যেটি মানসুখ হবে সেটির উপর আমল করা যাবে না।
খ.
যদি উভয় রিওয়য়াতের ভিতর
যদি নাসিখ-মানসুখ বের না হয় তাহলে কোনটির প্রাধান্য বেশি তার কমপক্ষে ৫০টি কারণ
দেখিয়ে সেটির উপর ভিত্তি করে যেকোন একটি হাদীসের গুরুত্বকে অধিক দিতে হবে।
গ.
যদি উপরের দুটির একটি
পন্থায়ও যদি সমাধান না হয় তাহলে দুটি হাদীসের উপর আমল করা বন্ধ রাখতে হবে যতক্ষণ
না তার সঠিক সমাধান না আসে।
মুখতাফুল
হাদীসের গ্রন্থাবলী
ইখতাফুল
হাদীস(ইমাম শাফিঈ কর্তৃক প্রণীত) ,মুখতারিফুল হাদীস এবং মুশকিলুল আসার।
No comments:
Post a Comment