Saturday 24 August 2013

প্রশ্নঃ উমর বিন আব্দুল আযীযের সংক্ষিপ্ত জীবনী লিখ এবং হাদীস সংকলনে তার ভূমিকা কি ছিল?

হযরত উমর বিন আব্দুল আযীযের দুই বছরের শাসনামল অত্যন্ত একটি গৌরাবজ্জ্বল অধ্যায়।তার এই সংক্ষিপ্ত শাসনামলে একটি বড় পদক্ষেপ ও কৃতিত্ব হল হাদীসসমূহকে একত্রিত করা। মুহাম্মদ(সাঃ) এর ওফাতের পর থেকে যখন কালক্রমে সহীহা হাদীস মুসলিমগণের ভিতর থেকে চলে যাচ্ছিল আর জাল হাদীসের ব্যাপক প্রচলন শুরু হয় ঠিক তখন থেকে উমর বিন আব্দুল আযীয হাদীস সংকলনের নির্দেশ্ রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রদান করে হাদীসের ইতিহাসে একটি মাইলফলক স্থাপন করে।হাদীসশাস্ত্রে তার এই অবদান নিম্নে দেওয়া হলঃ

জন্ম ও বংশ পরিচয় 

উমর বিন আব্দুল আযীয ছিলেন উমাইয়া বংশের ৮ম খলীফা।তিনি সুলায়মানের মৃত্যুর পর থেকে সেখানে খলীফা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।তার পিতা ছিল আব্দুল আযীয যিনি খলীফা মালিকের ভাই ছিলেন এবং তার মা ছিলেন ইসলামের ২য় খলীফা উমর(রাঃ) এর দৌহিত্রী।উমর(রাঃ) এর মত পার্থিব বিষয়ে অনাসক্তি,কঠোর কর্তব্যনিষ্ঠা, ন্যায়নিষ্ঠা,অনাড়ম্বতা ও ধর্মপরায়ণতার জন্যে তাকে ঐতিহাসিকগণ ২ঊ উমর বলে অভিহিত করে থাকেন। তার স্ত্রী ছিলেন ফাতিমা যিনি আব্দুল মালিকের মেয়ে ছিলেন।

শিক্ষা ও হাদীস বর্ণনা

তিনি একজন তাবিঈ ছিলেন।তিনি প্রথমতঃ মদীনার মুহাদ্দিস সালিহ বিন কায়সানের কাছে থেকে হাদীস ও দ্বীনী ইলম অর্জন করেছিলেন।এরপর তিনি মদীনার শাসনকর্তা হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মনীষীবৃন্দের সম্পর্কোন্নয়ন করে ইলমে হাদীস ও অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞানার্জন করতেন।তিনি নিজেই বলে থাকেন যে, আমি যখন মদীনায় গেলাম তখন আমার চেয়ে বড় (হাদীসে) জ্ঞানী আর কেউ ছিল না।
তিনি অসংখ্য সাহাবী এবং তাবিঈগণ হতে অধিকা হাদীস বর্ণনা করতেন। তার মত এত বিপুল সংখ্যক হাদীস আর কেউ বর্ণনা করতে পারতেন না।হাফিয যাহাবী বলেন,
উমর বিন আব্দুল আযীয ইমাম,ফিকহীবিদ,মুজতাহিদ,সুন্নাত ও হাদীসে বিশেষ পারদর্শী, সুমহান মর্যাদাসম্পন্ন, লব্দ্ব প্রতিষ্ঠিত হাদীস বিশারদ,গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য হাদীস বর্ণনাকারী,হাদীসের হাফিয, আল্লাহর হুকুম পালনকারী, বিনয়ী ও আল্লাহভক্ত লোক ছিলেন।

খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ

তিনি ৯৯ হিজরী সনে তার ক্ষমতার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।তিনি একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক ছিলেন। তিনি কথায় ও কাজে ইসলামী ভাবধারার আদর্শের অনুসারী ছিলেন।আমীরে মুয়াবিয়া(রাঃ) এর শাসনের পর থেকে উমাইয়া শাসকদের ভিতর চরম বৈষম্য, রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, প্রবঞ্চনা, প্রতারণা চলে আসছিল।তিনিই সর্বপ্রথম ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার প্রতি মনোনিবেশ করেছিলেন।
মুআবিয়ার শাসনামলে হাশমীয়দের সকল ধরনের সূযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়।কিন্তু উমর বিন আব্দুল আযীয তার রহিত করে দেন এবং সবার মাঝে পুনরায় ভাতা শুরু করেন।গোড়া মুসলিম তথা খারিজীগণ তার প্রতি চরম আনুগত্য প্রকাশ করেছিল।তিনি অনারব মুসলিমদের উপর আরোপিত সকল ধরনের জিযয়া মওকূফ করে দেন।তিনি উমাইয়দের আরোপিত আফ্রিকার বার্বাদের শিশুকর মওকূফ করে দিয়ে তিনি বার্বারদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছিলেন।তিনি বনু উমাইয়াদের সকল অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ বাজয়াপ্ত করেছিলেন। এ কারণে সারা মুসলিম জাহানে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।এইজন্যে তাকে খুলাফায়ে রাশেদীন ৫ম বলা হত।কিন্তু তার এই শাসন নীতিকে তার পরিবারের লোকেরা সহজে মেনে নিতে পারে নাই বলে তার এক বিশ্বস্ত ভৃত্যকে দিয়ে তাকে হত্যা করা হয় ৭২০ খৃষ্টাব্দে(১০১ হি)।তার খিলাফতকালে ছিল মাত্র দুই বছর ছয় মাস।

হাদীস সংকলনে উমর বিন আব্দুল আযীযের কার্যক্রমের ধারা

হযরত বিন আব্দুল আযীয ৯৯ হিজরী সালে খলীফা হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি তার খিলাফতের দায়িত্ব পালনের সময় হাদীস সংকলনের এক বিরাট প্রয়োজনীয় তা অনুভব করছিলেন। তিনি সেই সময় হাদীস সংকলের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন। তিনি যেই সকল কারণে হাদীস সংকলনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করলেন তার কারণসমূহ নিম্নরুপঃ

হাদীস সংকলনের কারণসমূহ

১। ইসলামী জীবন যাপন ও খিলাফতের হুকুমত প্রতিষ্ঠার জন্য হাদীস সংকলনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
২। যদি হাদীসসমূহ সংকলন না করা হয় তাহলে অনতিবিলম্বে মুসলিমগণের ভিতর থেকে হাদীস বিলুপ্তির আশংকা দেখা দেয়।কারণ অনেক সাহাবা আগেই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে যায়।তাবিঈদের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য ছিল। তারাও যে অনেকদিন জীবিত থেকে হাদীস মুখস্থের মাধ্যমে সংরক্ষণ রাখতে পারবে তার কোন নিশ্চিয়তা ছিল না।
৩। ব্যপক আকারে জাল হাদীসের শ্রয়লাভ সমাজে বিস্তার করেছিল। কোন হাদীসটি সঠিক ও কোনটি বেঠিক তা নির্ধারণ করা দুরুহ হয়ে দাড়িয়েছিল। তাই হাদীসের সত্য-মিথ্যা নিরুপণে এর প্রয়োজনীয়তা সকলে উপলব্দ্বি করেছিল।

 হাদীস সংকলনেরর জন্য খলীফার গৃহীত নীতিমালা

উমর বিন আব্দুল আযীয হাদীসকে লিপিব্দ্ব করার জন্য ধাপে ধাপে কিছু নীতিমালা গ্রহণ করেন।হাদীস সংকলনের জন্য তার কার্যক্রম নির্ধারণে গৃহীত নীতিমালাসমূহ নিম্নরুপঃ

বিভিন্ন রাজ্যের শাসকদের ফরমান জারী

উমর বিন আব্দুল আযীয হাদীসশাস্ত্রের এই অববিলুপ্তিকে রোধ করার জন্য যখন তা সংকলের প্রয়োজনীয়া অনুভব করলেন,তখন সেই কথা তিনি তার রাজ্যের বিভিন্ন শাসকবর্গের নিকট চিঠি প্রেরণ করেছিলেন। তিনি  যা বলেছিলেন তার ভাষা ছিল নিম্নরুপঃ
রাসূলের হাদীসের প্রতি দৃষ্টি দাও এবং তা সংগ্রহ ও সংকলন করতে শুরু কর।
তিনি তৎকালীণ মদীনার শাসক আবূ বকর বিন হাযমের কাছে এই পত্র প্রেরণ করেছিলেন যে,
রাসূলের হাদীস, তার সুন্নাত কিংবা উমরের বাণী অথবা তার মত কিছু পেলে তার প্রতি দৃষ্টি দাও এবং তা লিখে ফেল। কেননা আমি আশংকা করছি যে, ইলমে হাদীসের ধারকদের অন্তর্ধান এবং হাদীস সম্পদের বিলুপ্তির আশংকা বোধ করছি।
তার আরেকটি উক্তি থেকে উপলব্দ্বি করা যায় যে, হাদীসশাস্ত্রের প্রসারে তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত বলিষ্ঠ যা হলঃ
আর হাদীসে রাসূল ছাড়া যেন কিছুই গ্রহণ না করা হয়।লোকেরা যেন ইলমে হাদীস ব্যাপকভাবে প্রচার করে। হাদীস শিক্ষাদানের জন্য যেন মজলিশ অনুষ্ঠিত হয় যারা জানে না তাদের যেন শিখানো হয়।কারণ ইলম গোপন হলে তা বিনাশপ্রাপ্ত হবে।
ঐতিহাসিক বিন  সায়াদ উমর বিন  আব্দুল আযীযের ফরমানের আরেকটি অংশের কথাও উল্লেখ করেছিলেন। তার উদ্বৃত অংশটুকু নিম্নে দেওয়া হলঃ
উমর ইবনে আব্দুল আযীয আবূ বকর বিন আযমকে উমরা বর্ণিত হাদীসমূহ লিখে তার নিকট পাঠানোর জন্য ফরমান পাঠিয়েছিলেন।

আয়শা সিদ্দীকা(রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসসমূহ লিপিবদ্ব করার জন্য আহবান
ইবনে সয়াদ এই কথাও উল্লেখ করেছিলেন যে, ২য় উমর আয়শা সিদ্দীকা(রাঃ) এর হাদীসসমূহ লিপিবদ্ব করার জন্য জন্য আদেশ প্রদান করেছিলেন। আর উমর বিন আব্দুল আযীয উমরা বিনতে আব্দুর রহমানের নিকট হতে বর্ণিত হাদীসসমূহ লিপিবদ্ব করার ব্যাপারে বিশেষভাবে জোড় প্রদান করেছিলেন। কেননা এই উমারা বিনতে আব্দুর রহমান আয়শা(রাঃ) এর কোলে বিশেষভাবে লালিত-পালিত হন এবং তার কাছে থেকে  আকাইদ ও শরীয়াতের আহকামের ব্যাপারে হাদীসসমূহ লিপিবদ্ব করার ব্যাপারে বিশেষভাবে উৎসাহ প্রদান করেছিলেন।উমর বিন আব্দুল আযীয নিজেই এই উমারার ব্যাপারে বলেছেন,
আয়শার বর্ণিত হাদীস সম্পর্কে উমরা থেকে বড় আলিম আর কেউ ছিল না।
ইমাম যুহরী বলেছিলেন,
আমি তাকে হাদীস জ্ঞানের এক অফুরন্ত সমুদ্রের মত পেয়েছিলাম।
কাসিম বিন আবূ বকর ছিলেন হযরত আয়শা(রাঃ) এর ভাতিজা। তার পিতা যখন নিহত হন তখন তিনি তার ফুফু আয়শা(রাঃ) এর নিকট লালিত-পালইত হন এবং তার কাছে থেকে দ্বীন জ্ঞান অর্জন করেন।
এই কাসিম বিন আবূ বকরের ব্যাপারে ইবনে হাব্বান বলেন,
কাসিম তাবিঈ এবং তার সময়কার লোকদের মধ্যে হাদীস ও দ্বীনের জ্ঞানের দিক দিয়ে সর্বোত্তম ছিলেন।
তিনি সেই সেই সময়ে মদীনার একজন প্রধান ফকীহ ছিলেন এবং ইসলামী আইন-কানূনে তার নিকট অতুলনীয় পারদর্শিতা ছিল। উমরা বিনতে আব্দুর রহমানের নিকট বর্ণিত যাবতীয় হাদীসসমূহ তিনি লিপিবদ্ব করে রাখতেন।এভাবে করে তিনি অসংখ্য হাদীস লিপিবদ্ব করেছিলেন কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তা খলীফার মৃত্যুর আগে দারুল খিলাফতে পৌছানো সম্ভব হয় নাই।যদিও কেউ বলে থাকেন যে, পরবর্তীতে তা বিলুপ্ত হয়ে যায় । কিন্তু তা প্রকৃতপক্ষে সত্য নয়।মূলত তা সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে হাদীসের বিকাশে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

উমর(রাঃ) এর যাকাত সংক্রান্ত হাদীস সংগ্রহে দিক-নির্দেশনা
হাযম বিন আবু বকর ছাড়াও ২য় উমর সেই সময় সালিম বিন আব্দুল্লাহকে হাদীস সংকলনের দিক-নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন। আল্লামা সুয়ূতী লিখিছেন যে,
উমর বিন আব্দুল আযীয সালিম বিন আব্দুল্লাহকে হযরত উমরের যাকাত ও সদকা সম্পর্কে অবলম্বিত রীতি-নীতি লিখে পাঠানোর জন্য আদেশ করেছিলেন।
সুয়ূতী সালিম সম্পর্কে লিখেছিলেন,
সালিম যেই বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছিলেন তা তিনি পুরোপুরি লিখে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সাথে সালিম তাকে এটাও লিখিছিলেন যে, উমর(রাঃ) তার আমলেও তদান্তীন লোকদের মধ্যে অনুরুপ কাজ করেন তবে আপনি আল্লাহর নিকট উমর ফারুক থেকে উত্তম বলে বিবেচিত হবে।
এই ব্যাপারে মুহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আনসারী বলেন,
উমর বিন আব্দুল আযীয যখন খলীফা হিসেবে নির্বাচিত হলেন,তখন মদীনায় রাসূলে করীমের ও উমরের যাকাত সংক্রান্ত দস্তাবেজ সংগ্রহের জন্য তাকীদ করে পাঠালেন।পরবর্তীতে আমর বিন হাযমের বংশ এবং উমর(রাঃ) এর বংশধর থেকে দস্তাবেজ পাওয়া গেল।

ইমাম যুহরীকে বিশেষ দায়িত্ব অর্পন
উমর বিন আব্দুল আযীয ইমাম যুহরীকে হাদীস সংকলনের জন্য বিশেষভাবে দায়িত্ব প্রদান করেছিলেন। ইমাম যুহরীর ব্যাপারে স্বয়ং উমর বিন আব্দুল আযীয নিজেই বলেছেন,
সুন্নাত ও হাদীস সম্পর্কে যুহরীর থেকে বড় আলিম বিগত কালে আর কেউ ছিলেন না।
এ সম্পর্কে ইমাম ইবনে যুহরী(রঃ) বলেন,
উমর বিন আব্দুল আযীয আমাদেরকে হাদীস সংগ্রহ ও সংকলনের জন্য আদেশ করলেন। এই আদেশ পেয়ে আমার হাদীস গ্রন্থ লিপিবদ্ব হয়,তারপর তা তার রাজ্যে পাঠানোর পর রাজ্যের প্রত্যকটি প্রদেশে এক খানি গ্রন্থ পাঠিয়ে দেন।
এটি যে সর্বপ্রথম সংকলিত হাদীস তাতে কোন সন্দেহ নেই।তাই ইমাম মালিক (রঃ) বলেন,
সর্বপ্রথম যিনি হাদীস সংকলন করেন তিনি হলেন ইবনে শিহাব যুহরী।
ইমাম ইবনে যুহরী নিজেই স্বীকার করে বলেছেন,
আমার পূর্বে কেউ হাদীস আর সংকলিত হয় নাই।

খলীফার নিজের পক্ষ থেকে হাদীস সংকলন
হাদীস শিক্ষা দান করার পাশাপাশি উমর বিন আব্দুল আযীয রাসূলুল্লাহ(সাঃ) এর যুদ্ব-বিগ্রহের শিক্ষা-দীক্ষা এবং চরিত্র গঠনের শিক্ষা দেওয়ার জন্য দামেশকের জামে মসজিদে বসে উমর কাতাদাহকে প্রেরণ করেছিলেন।
উমর বিন আব্দুল আযীয শুধুমাত্র হাদীস সংগ্রহ ও লিপিবদ্ব করার নির্দেশ প্রদান করেন নাই,বরং তার শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করার জন্য সুস্পষ্টভাবে ফরমান জারী করেছিলেন। তিনি একজন শাসকের কাছে এই ফরমান জারী করেছিলেন যে, প্রত্যেক বিদ্বন ব্যক্তি যেন হাদীসের সুশিক্ষা সকলের নিকট যথযথভাবে পৌছিয়ে দেয়। তা না হলে হাদীসের শিক্ষার অস্তিত্বকে তিনি হুমকিস্বরুপ মনে করতেন।
উমর বিন আব্দুল আযীয শুধুমাত্র সকলকে হাদীস সংগ্রহএর জন্য তাগিদ দেন নাই বরং তিনি নিজেও হাদীস সংকলন করতেন। তার হাদীস সংকলনের ব্যাপারে এমন দৃষ্টান্ত আছে যে, তিনি একবার যুহরের নামাযের সময় মসজিদ গমন করেন এবং বের হন আসরের নামাযের সময়।তখন তার হাতে বেশ কিছু দস্তাগত কাগজ ছিল যার ভিতর আউন বিন আব্দুল্লাহর বর্ণিত হাদীস লিপিবদ্ব হয়।

ইমাম যুহরী ব্যতীত হাদীস সংকলনে অন্যান্য মুহাদ্দিসবৃন্দ
পরবর্তীতে ইমাম যুহরীর পর ইসলামী রষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে যারা হাদীস সংকলনের কাজ নিয়োজিত ছিলেন তারা হলেন,
মক্কার ইবন জুরাইজ, মদীনার ইবন ইসহাক ও ইমাম মালিক, বসরার রুবাই বিন সুবাহ ও হাম্মাদ বিন সালমা, কূফায় সুফিয়ান সাওরী, সিরিয়ায় ইমাম আওযায়ী ইয়ামানে মামার ও খুরসানে আব্দুল্লাহ বিন মুবারক।
এভাবে করে অনেকে হাদীস সংকলনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। যারা অধ্যায়ভিত্তিক হাদীস সংকলনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন তারা হলেন রুবাই বিন সুবাহ এবং সাদ বিন আবূ আরুবা।
আবার কেউ কেউ বলে থাকেন যে, ইমাম মকহুল ছিলেন সর্বপ্রথম অধ্যয়ভিত্তিক হাদীস গ্রন্থের প্রণেতা।
আবার কূফা নগরীতে ইমাম শাবী (রঃ) এ বিষয়ে হাদীসগ্রন্থ প্রণয়ন করেছিলেন যিনি কূফাতে প্রধান বিচারপতি ছিলেন।

উপসংহার


পরিশেষে বলা যায় যে, হযরত উমর বিন আব্দুল আযীয সর্বপ্রথম শাসক যিনি সর্বপ্রথম রাষ্ট্রীয়ভাবে হাদীস সংকলনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। তার এই গৃহীত পদক্ষেপের জন্য পরবর্তীতে হাদীস সংকলনের পথ একেবার উন্মুক্ত হয়ে যায়।তিনি যেই সময়ে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন তা না হলে জাল হাদীস এর সংমিশ্রনে সঠিক হাদীসসমূহ আমাদের মধ্য থেকে অতি স্বল্প সময়ে হারিয়ে যেত।তাই হাদীস সঙ্গকলনে তার অবদান অবিস্মরণীয়।

No comments:

Post a Comment

৩৮ তম বিসিএস এর রেজাল্ট

৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে পিএসসি। বাংলাদেশ কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক এ কথা নিশ্চিত করেন। ...