Wednesday, 21 May 2014

প্রশ্নঃ বাংলাদেশে সামাজিক গবেষণার সমস্যাবলী কি কি আলোচনা কর।


ভূমিকা

গবেষণা করা একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। গবেষণার মাধ্যমে যেকোন সমস্যা উদ্ভাবিত হয় আর তারই মাধ্যমে তার সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের মত একটি দরিদ্র্য-নিপীড়ীত গোষ্ঠীর জন্যে গবেষণামূলক কাজ অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়। কিন্তু তা বিভিন্ন ধরনের সমস্যাবলীর কারণে তা সম্ভবপর হয়ে উঠছে না। কিন্তু বাংলাদেশে সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশের সমাজ গবেষণার মূল মূল সমস্যাবলী হল সমাজ গবেষণা ও রাজনীতি প্রশাসনের অসম অবস্থান, সমাজ-গবেষণা পরিচালনায় আর্থ-সামাজিক ও প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা,সমাজ গবেষকদের ব্যক্তিগত সমস্যা,তথ্য সরবারহকারীর সীমাবদ্বতা,সমাজ গবেষণায় ব্যক্তিগত সমস্যা ইত্যাদি। এই সকল বিষয়ের ভিতর আবার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে যা সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলঃ


সমাজগবেষণার মূল মূল সমস্যাবলী পাঁচ ভাগে বিভক্ত যা হল

ক. সমাজ গবেষণায় ব্যক্তিগত সমস্যা

১. সমাজ গবেষণায় উপযুক্ত পদ্বতি প্রয়োগের অপরাগতা

এখানে মূলত ঐতিহাসিক বা পরীক্ষণ পদ্বতির পরিবর্তে জরিপ বা পরিসংখ্যান পদ্বতির প্রয়োগ করা হয়।যা সঠিক ও নির্ভুল গবেষণা ফলাফল লাভে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।

২. প্রয়োজনীয় এবং দেশজ প্রকাশনার অভাব

আমাদের দেশে প্রয়োজনীয় ও দেশজ প্রকাশনার অভাব রয়েছে। মূলত তা ব্যয়বহহুল এবং আর্থিকভাবে লাভজনক প্রতিষ্ঠান না হওয়াতে তা সঠিকভাবে এখনও গড়ে উঠতে পারে নাই। যা গবেষকদের জন্যে আমাদের দেশে গবেষণা করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। প্রকাশনার অভাবের কারণে তারা তা সময় মত প্রকাশ করতে পারছে না যার ফলে গবেষকগণ গবেষণার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

৩. মাতৃভাষায় গবেষণার ব্যাপারে অনীহা

বর্তমানে সকল গবেষণা কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক ইংরেজী ভাষায় লিপিবদ্ব। গবেষণার জন্যে যে পর্যাপ্ত পরিমাণ যে বই-পুস্তক দরকার তা বাংলা ভাষায় অপ্রতুল।তাই অনেকে এই মাতৃভাষায় গবেষণা করতে অনীহা প্রকাশ করে থাকে। এছাড়া বাংলা ভাষায় গবেষণা করলে পরে কেউ তার জন্যে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি লাভ করতে পারে না বলে আজকাল অনেকে ইংরেজী বাংলা ভাষার পরিবর্তে ইংরেজী ভাষায় গবেষণা করে অনেক গবেষক কিন্তু তাতে বাংলা ভাষার উপর গবেষণার কোন উন্নতি হচ্ছে না।

৪. প্রয়োজনীয় লিটারেচার,গবেষণাগার,আধুনিক যন্ত্রপাতি ও উপকরণের অভাব

গবেষণা করার জন্যে শুধুমাত্র গবেষক থাকলেই হয় না। বরং এর জন্যে দরকার হল লিটারেচার, গবেষণাগার, আধুনিল যন্ত্রপাতি ও উপকরণাদী।কিন্তু আমাদের এই দারিদ্র্যবহুল দেশে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় গবেষণার কাজ সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না।

৫. গবেষণালব্দ্ব তথ্য সংরক্ষণে অব্যবস্থাপনা

গবেষণা করার পর যে তথ্য লাভ করা হয় তা সংরক্ষণের জন্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। কিন্তু তা সংরক্ষণের ব্যাপারে যদি কর্তৃপক্ষ যথাযথ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে সেই গবেষণা করে কোন লাভ হয় না।সেই তথ্য যেকোন সময় সকলের মাঝে থেকে হারিয়ে যেতে পারে। আমাদের দেশের অধিকাংশ গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানসমূহ তথ্য সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার দরুন আমাদের দেশে গবেষকদের নানা বিধি সমস্যা হচ্ছে।

৬. ইন্টারনেট,কম্পিউটারের মত আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সীমিতকরণ

আধুনিক বিশ্বে গবেষণা করার জন্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। একজন গবেষক যে প্রতিষ্ঠানে বসে গবেষণা করবে সেখান থেকে তাদেরকে ল্যাপটপ,ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ-সুবিধাসহ আরও নানা ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশে আর্থিক সংকটের দরুন তা প্রদান করা হয় না বলে বিধায় আমাদের দেশে গবেষণামূলক কার্যক্রম বিশেষভাবে ব্যহত হচ্ছে।

৭. পর্যাপ্ত পরিমাণ দক্ষ গবেষকদের অভাব

গবেষণার জন্যে আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ সুদক্ষ গবেষকদের অভাব রয়েছে যা আমাদের দেশে সঠিক গবেষণা এক বিশাল অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে।

৮। অর্থনৈতিক সংকট

অর্থনৈতিক সংকট গবেষণার উপর এক বিরুপ প্রভাবসৃষ্টিকারী বিষয়। অর্থসংটকের দরুন অনেক সময় গবেষকগণ মাঝপথে এসে তাদের গবেষণামূলক কার্যক্রম স্থগিত রাখে।যার ফলে সমাজ গবেষণা ঠিক মত হচ্ছে না।

৯।অশিক্ষা

 আমাদের দেশের শতকরা ৬২.৩ শতাংশ লোক শিক্ষিত। যারা শিক্ষিত তারা অনেক সময় তাদের স্বীয় ব্যবসা-বাণিজ্য এবং চাকুরী নিয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত হয়ে পড়ে যার ফলে তারা সক্রিয়ভাবে কোন ধরনের গবেষণামূলক কাজের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে না আর এই দক্ষ গবেষকদের অভাব আমাদের দেশে গবেষণার কাজ বিশেষভাবে ব্যহত হচ্ছে।

১০। তথ্য সংগ্রহ পদ্বতিতে সংকট

গবেষণা করার জন্যে অনেক সময় আধুনিক তথ্য-উপাত্ত যোগার করার সুব্যবস্থা রাখতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে তা পর্যাপ্ত নয় বলে গবেষণার বিকাশ তা এক বিরাট অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে।

খ. সমাজ-গবেষণা পরিচালনায় আর্থ-সামাজিক ও প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা

১. জনগণের অসচেতনতা

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ গবেষণার ব্যাপারে উদাসীন এবং অসচেতন।তাই একদিকে তারা যেমন নিজেরাও গবেষণা করে আর আবার যারা গবেষণা করে থাকে তাদের বিরুদ্বে বিভিন্ন ধরনের অপবাদমূলক কথা বলা হয় যা গবেষণার জন্যে অন্তরায় হিসেবে কাজ কর। ।জনগণের অসচেতনতা এবং জ্ঞান আহরণ ও গবেষণায় কাজের প্রতি তার নেতিবাচক প্রভাবের কারণে সামাজিক গবেষণায় সমস্যা সৃষ্টি হয়।

২. যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা

যোগাযোগের সমস্যার দরুন গবেষণার কাজ ঠিকমত করা যায় না।অনেক সময় প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনবের প্রাকৃতিক দুর্যোগের দরুন সঠিকভাবে করা যায় না।অনেক জায়গার রাস্তা-ঘাট নষ্ট থাকে। যার ফলে তথ্য প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সঠিভাবে সংগ্রহ করা করা একটি দুরুহ বিষয় হয়ে দাঁড়ায় এবং সঠিক গবেষণার ফলাফল সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না।  

৩.সংকটাপন্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থা

যখন আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার বিকাশ রুদ্ব হয় তখন জ্ঞান-বিজ্ঞানচর্চ্চা একদম বন্ধ হয়ে যায়। আর এর প্রভাব গবেষণার উপর পড়ে যার ফলে তা আর করা যায় না।

৪. গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফল প্রকাশ ও বিতরণে অব্যবস্থাপনা

একজন গবেষক কোন বিষয় গবেষণা করার পরে তা সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা না থাকার দরুন তা যথাসময়ে প্রকাশিত হয় না। তা সম্পাদনার জন্যে অনেক সময় লাগে। যখন যেই গবেষণা প্রকাশ করা দরকার তখন তা প্রকাশিত হচ্ছে না। আর যার ফলে যে সমস্যার উপর ভিত্তি করে কোন গবেষণা করা হয় তা তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার না দরুন তার তাৎক্ষণিক কোন সমাধান দেওয়া সম্ভবপর নয়

৫. গবেষকদের সামাজিক স্বীকৃতি ও মর্যাদার অভাব

গবেষকদের আমাদের দেশে সামাজিকভাবে কোন ধরনের স্বীকৃতি বা মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না। তারা গবেষণার বিনিময় খুবই সামান্য টাকা-পয়সা অর্জন করে থাকে। তাদেরকে সামাজিকভাবে খুব বেশী মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না। যার ফলে গবেষকগণ গবেষণা করার ব্যাপারে কোন ধরনের উৎসাহ পায় না আবার নতুন করে কেউ গবেষক হওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ অর্জন করতে পারে না।

গ. সমাজ গবেষকদের ব্যক্তিগত সমস্যা

১.নিষ্ঠা,ধৈর্য্য,সাধুতা এবং আন্তরিকতার অভাব

আমাদের গবেষকদের গবেষণার জন্যে পর্যাপ্ত  নিষ্ঠা,ধৈর্য্য,সাধুতা এবং আন্তরিকতার অভাব রয়েছে।কিন্তু একটি সঠিক ও সুন্দর গবেষণা করার জন্যে দীর্ঘ দিন সময় লাগে। আর এই দীর্ঘ সময়ে কাজ করার জন্যে দরকার পর্যাপ্ত ধৈর্য্য,আন্তরিকতা ও সাধুতা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, আমাদের দেশের গবেষকদের ভিতর আজ তা নেই বলে গবেষণার কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে না।

২. শিক্ষণ,প্রশিক্ষণ,প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার অভাব

গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডকে সাফল্যমণ্ডিত করার লক্ষ্যে গবেষকদের পর্যাপ্ত শিক্ষণ,প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার শিক্ষা দেওয়া দরকার।এরজন্যে দরকার বাহিরে থেকে দক্ষ গবেষকদের এখানে নিয়ে এসে গবেষকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা। কিন্তু আমাদের দেশে গবেষকদের জন্যে সেই ধরনের কোন সুযোগ-সুবিধা নেই।গবেষকদের গবেষণার জ্যনে উপযুক্ত শিক্ষণ,প্রশিক্ষণ,প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে। তাই গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড সঙ্ঘটিত হচ্ছে না।

৩. শিক্ষকগণের কর্মব্যস্ততা

আমাদের দেশে যেহেতু বেশীরভাগ গবেষক শিক্ষাবিদ আর তাদের কর্ম পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক তাই তারা নিজেদের গবেষণার কাজে বেশী সময় দিতে পারে না।

৪.স্বার্থভিত্তিক ও ব্যবসায়ীক মনোবৃত্তি

 যারা সত্যানুসন্ধানের পরিবর্তে নিজেদের স্বার্থ কিংবা ব্যবসায়িক মনোভাবকে বড় করে দেখে। যে বিষয়টি গবেষণা করা দরকার তা নিয়ে তাদের ভিতর কোন গবেষণা হয় না।বরং গবেষণা হয় তাদের মধ্যকার যে বিষয়টির দ্বারা নিজ স্বার্থ প্রতিষ্ঠা হয় কিংবা ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবে সেই বিষয়টির প্রতি তারা বেশী নজর দেয় যা আমাদের দেশে সঠিক গবেষণায় এক বিরাট অন্তরায় হিসেবে কাজ করে।

৫. বিষয় নির্বাচনের সংকট

আমাদের দেশে বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিজস্ব নিজস্ব স্বাধীনতার চেয়ে অর্থ লগ্নি প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছা বা বাজার চাহিদার উপর নির্ভরশীলতা বেশী। গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহ সর্বদা যে বিষয়টিকে তাদের ব্যবসায়িক বিকাশের জন্যে সহায়ক মনে করবে কেবলমাত্র সেই বিষয়টির প্রতি অত্যাধিক গুরুত্বারোপ করে থাকে। আর কোন গবেষক যদি এমন কোন বিষয়ে গবেষণা করে থাকে যে বিষয়ে আগে কোনদিন গবেষণা হয় নাই কিন্তু যদি সেই গবেষণা প্রতিষ্ঠান মনে করে থাকে যে, এর দ্বারা প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হবে না তাহলে তারা সেই বিষয়ে গবেষণা করতে গবেষককে কোন অনুমতি প্রদান করবে না।

ঘ. তথ্য সরবারহকারীর সীমাবদ্বতা

১। তথ্য প্রদানে অপরাগতা

আমাদের দেশের লোকেরা সামাজিক, ব্যক্তিগত,পারিবারিক,ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন ধরনের সঠিক তথ্য গবেষকদের সামনে দিতে ইতঃস্তত বোধ করে থাকেন। পর্দা প্রথার দরুন যৌনতা কিংবা পরিবার পরিকল্পণার মত কাজে কেউ গবেষকদের সহযোগিতা করে না।

২।তথ্য সরবারাহকারীর ব্যক্তিগত সমস্যা

 অনেকে নিজেদের ব্যক্তিগত আয়,বয়স,পেশা ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন কারণে প্রকাশ করতে চায় না যার ফলে তা গবেষণার ক্ষেত্রে এক বিরাট অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া তাদের অনেকে অশিক্ষিত। তারা সঠিকভাবে গবেষকদের কাছে তথ্য সরবারাহ করতে পারে না। তারপর যখন কোন বিষয়ে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় তখন অনেক লোক এসে জামায়াতবদ্ব হয় যার ফলে অনেক সময় একজন গবেষক সঠিকভাবে তথ্য সরবারাহকারীর কাছে থেকে তথ্য পেতে সমর্থ হয় না।

৩।ডাক ব্যস্থার সমস্যা

 ডাক যোগে প্রশ্নমালা পাঠানো হয় তা অনেক সময় উত্তরদাতা অশিক্ষিত হওয়ার দরুন তা সঠিকভাবে পূরণ করে না আবার তা ডাকযোগে তারা গবেষকদের কাছে পৌছায় না যার ফলে এই তথ্যসরবারাহকারীর সীমাবদ্বতার কারণে গবেষণার কাজ বাধাগ্রস্থ হয়ে দাঁড়ায়।

৪। বিরক্তকারী অবস্থা

আমাদের দেশের অধিকাংশ গবেষণা ঢাকাতে হয়ে থাকে। ঢাকায় অবস্থানকারী গবেষকগণ অনেক সময় দূরবর্তী এলাকায় গমন না করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় বার বার গবেষণার কাজ সম্পাদন করে থাকে। একই ব্যক্তির কাছে বার বার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করলে পরে সে বিরক্তি প্রকাশ করে আর যার ফলে তা গবেষণার জন্যে এক বিরাট অন্তরায় হিসেবে কাজ করে।   

৫। বাংলাদেশের মানুষদের অশিক্ষা,কুশিক্ষা এবং কুসংস্কারের প্রভাব

বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক অশিক্ষা,কুশিক্ষা ও কুসংস্কারের বেড়াজালে আবদ্ব হওয়ার ফলে তারা গবেষকদের  সঠিকভাবে  গবেষণার কাজে সহায়তা করতে পারছে না যার ফলে গবেষণার কাজে দ্রুত কোন অগ্রগতি হচ্ছে না।

ঙ. সমাজ গবেষণা ও রাজনীতি প্রশাসনের অসম অবস্থান

১.রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের অনীহা

 রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের অনীহার রয়েছে। তারা প্রতি বছর গবেষণা খাতে কুব কুম টাকা বরাদ্দ করে থাকে। এই অর্থসংকটের কারণে গবেষণার কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হচ্ছে না।

২. আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার প্রভাব-প্রতিপত্তি

যারা এই দেশে বিভিন্ন গবেষণা এবং উন্নয়নমূলক কাজে অর্থ-করী প্রতিষ্ঠান আছে তারা এমন কোন ধরনের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করতে দিবে না যার দ্বারা তাদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়।তাই তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে কখনও কখনও গবেষণার কাজ বিশেষভাবে ব্যহত হয়।

৩. সরকারী প্রশাসনের জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা এবং প্রত্যক্ষ সহায়তা দানের ক্ষেত্রে গড়িমসি

একটি দেশে যেকোন কিছু উন্নয়নের পিছনে প্রশাসনিক সহায়তার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তাই গবেষণার উন্নয়নের জন্যে প্রশাসনের সহায়তা একান্তভাবে কাম্য। কিন্তু আমাদের দেশের প্রশাসন তা না করছে না বরং গবেষকদের সহায়তার পরিবর্তে হয়রানী করছে সঠিক তথ্য,অনুমতি,কার্যক্রম সহ আরও নানা বিষয়ে। তাই গবেষণার কাজের তেমন কোন অগ্রগতি হচ্ছে না।

৪.চাপ প্রয়োগকারী পরিস্থিতি

কখনও কখনও কোন গবেষণার মাধ্যমে আমাদের দেশের দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ এবং অদক্ষ প্রশাসনের চিত্র সকলের সামেন তুলে ধরা হয়।তাই তা যেন জনগণের সামনে তুলে ধরা নায় এরজন্যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে প্রকাশ না ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ সৃষ্টি করা হয়।ফলশ্রুতিতে আমাদের দেশে গবেষণামূলক কাজ সঠিকভাবে যথার্থ অগ্রগতি লাভ করতে পারছে না।

৫. আন্তর্জাতিক শক্তিধর প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে গবেষণা

বাংলাদেশে আর্থ-সামাজিক সমস্যা কিংবা অর্থনৈতিক বিষয়ক অনেক গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক শক্তিধর প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে হয় থাকে। এভাবে করে স্বার্থভিত্তিক গবেষণামূলক কার্যক্রমের জন্যে সঠিক গবেষণার ফলাফল কেউ পাচ্ছে না।

উপসংহার


বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকার দেশসমূহ উন্নতি করার অন্যতম কারণ হল তাদের উন্নতমূলক গবেষণামূলক ব্যবস্থা।কিন্তু আমদের দেশ আজ পিছিয়ে পড়া একটি অন্যতম কারণ এই গবেষণা করতে নানা বিধ সমস্যার সম্মুখীন হওয়া। তাই রাষ্ট্র এবং জনগণ উভয়কে এই সকল সমস্যাবলী থেকে উত্তরণের ব্যাপারে গবেষকদের পর্যাপ্ত সহায়তা করে  এ কাজের অগ্রগতি করতে হবে।

No comments:

Post a Comment

৩৮ তম বিসিএস এর রেজাল্ট

৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে পিএসসি। বাংলাদেশ কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক এ কথা নিশ্চিত করেন। ...