নিয়ামতপ্রাপ্ত কারা ও তাদের কি কি নিআমত দেয়া হয়েছে তা উল্লেখ কর।
বায়যাভী(রঃ) এর মত হল এখানে যাদেরর উপর
আল্লাহর অনুগ্রহ আসে আর যারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় না তারাই প্রকৃতপক্ষে নিআমতপ্রাপ্ত।
নিআমত শব্দটি ইনাম থেকে উদ্ভূত যাদেরকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে আর তারাই
হল নিআমতপ্রাপ্ত।অন্যদিকে অন্যান্য জীব-জন্তুদের যা দেওয়া হয় তাহল রিযিক। কারা
কারা নিআমতপ্রাপ্ত হবে তাদের ব্যাপারে মুফাসসিরীনগণ বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য পেশ করে
থাকেন। তাদের কিছু কিছু ব্যক্তব্য নিম্নে দেওয়া হলঃ
আল্লামা আলূসী(রঃ) বলেন,
বায়যাভী(রঃ) বলেন, সকল মুমিনগণ হল নিআমতপ্রাপ্ত। যেহেতু তাদের
ঈমানের মত দৌলত দান করা হয়েছে তাই তারাই নিআমতপ্রাপ্ত।
কারও মতে, নবী-রাসূলদের বুঝানো হয়েছে।
কারও মতে, মূসা(আঃ) ও ইসা(আঃ) এর সঙ্গীগণ।
কারও মতে, রাসূলুল্লাহ(সাঃ) এর সাহাবাগণ।
কারও মতে, রাসূলুল্লাহ(সাঃ),
আবূ
বকর(রাঃ) ও উমার(রাঃ)।
ইবনে আব্বাস(রাঃ) এর কথা হল এর দ্বারা
নবী-রাসূলগণ,ফেরেশ্তাগণ,সত্যবাদীগণ অন্তর্ভূক্ত।
কারণ আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, যাঁদের প্রতি
আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেন, সে তাঁদের সঙ্গী
হবে। তাঁরা হলেন নবী, ছিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ। [নিসাঃ৬৯]
যেসকল নিআমত তাদের দেওয়া হয়েছে
তাদেরকে কি ধরবনের নিআমত দেওয়া হয়েছে সে
ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়। সেইসকল বক্তব্যসমূহ নিম্নে পেশ করা হলঃ
১. তাদেরকে অসংখ্য নিআমত দেওয়া হয়েছে যা কখনও
গণনা করে শেষ করা যাবে না। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, তবে গুণে শেষ করতে পারবে না। [ইব্রাহীমঃ৩৪]
২. আল্লাহ তাদেরকে সৌভাগ্যবান করে সৃষ্টি
করেছেন।
৩. আল্লাহ পাক যাদের নিআমত দান করেছেন তাদেরকে
তিনি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছেন।
৪. তারা সঠিকপ্রাপ্ত যা আল্লাহ প্রদত্ত এক
বিশেষ নিআমত।
৫. ঈমানের মত নিআমত প্রদান করা হল তাদের প্রতি
বিশেষ নিআমত।
মাগদুবী এবং দোলীন দ্বারা কাদেরকে
বুঝানো হয়েছে?
সূরা ফাতিহার শেষ আয়াতে মাগদূবী এবং দোলীন
এই দুটি শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে আর এই দুটি বিষয় থেকে একজন বান্দা তার স্বীয়
প্রভূর কাছে থেকে পানাহা কামনা করছে। মাগদুবী এবং দোলীন দ্বারা কাদেরকে বুঝানো
হয়েছে এ ব্যাপারে কয়েকটি মতামত পাওয়া যায় যা হলঃ
১. মাগদুবী হল সেইসকল সম্প্রদায় যাদের উপর
আল্লাহর গযব পতিত হয়। তাই এখানে ইয়াহূদী সম্প্রদায়ের কথা বলা হয়েছে। তাই কুরআনে
আল্লাহ ইরশাদ করেন, বলুনঃ আমি
তোমাদেরকে বলি, তাদের মধ্যে কার
মন্দ প্রতিফল রয়েছে আল্লাহর কাছে?
যাদের
প্রতি আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন, যাদের প্রতি তিনি
ক্রোধাম্বিত হয়েছেন, যাদের কতককে বানর
ও শুকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন। [মায়িদাঃ৬৫]
অন্যদিকে দোললীন হল খৃষ্টান সম্প্রদায় যাদেরকে
আল্লাহ পাক কোন গযবে পতিত করেন নাই। এ ব্যাপারে কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে যে, তারা নিজেরাই নিজেদের পথভ্রষ্ট করেছে
অন্যদেরকেও করেছে।
২. মাগদুবী হল যারা গুনাহগার।জেনেবুঝে পাপকাজ
সম্পাদন করে। যারা আল্লাহর পরিচয় জেনেও জেনে বুঝে পাপকার্য সম্পাদন করে থাকে।
অন্যদিলে দোলীন হল তারা যারা অজ্ঞ-মূর্খ তারা হল দললীন।
৩. যারা ঈমান আনার পরেও আমলগত ত্রুটি সাধন করে
থাকে তারা হল মাগদুবী। আর যাদের আকীদাগত ত্রুটি আছে অর্থাৎ, ইলম তার দোললীনের অন্তর্ভূক্ত।
৪. মাগদুবী দ্বারা কাফির সম্প্রদায় ও দোললীন
দ্বারা মুনাফিক সম্প্রদায়ের কথা বলা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment