Wednesday, 18 September 2013

প্রশ্নঃতালেবান কারা?তাদের উত্থান-পতন সম্পর্কে যা জান লিখ।

প্রশ্নঃতালেবান কারা?তাদের উত্থান-পতন সম্পর্কে যা জান লিখ।
আফগানিস্তানে তালেবানগণ ১৯৯৬ হতে ২০০১ পাঁচ বছর শাসন করে।তাদের এই শাসনকাল ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তালেবানদের সর্বপ্রথম উত্থান ঘটে ১৯৯৪ সালে।আফগানিস্তান থেকে যখন সোভিয়েত-বাহিনী চলে যায় সেসময় ড.নজিবুল্লাহ বাহিনী ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন আরও তিন বছর।অতঃপর ১৯৯২ সালে নজিবুল্লাহ সরকারের পতন ঘটলে সেখানে উজবেব নেতা আহমদ শাহ মাসুদ এবং হেকমাতিয়ার এই দুই মুজাহিদ বাহিনীর ভিতর ক্ষমতার রেষ ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ শুরু হয়।১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার আফগান জনগণ নিহত হয় এ গৃহযুদ্বের দরুন।অতঃপর দেশের জনগণ এই দুটি দলের উপর তারা তিক্ত-বিরক্ত হয়ে অন্য একটি দলকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করল।এমন অবস্থায় তালিবানদের জন্ম হল এবং তারা তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে।
তালেবান পরিচিতি
তালিব আরবী শব্দ যার অর্থ হল জ্ঞান তলবকারী কিংবা ছাত্র।তালিবুল ইলম অর্থ হল জ্ঞান তালাশকারী ছাত্র। এ শব্দটি ফার্সী ভাষায় ব্যবহৃত হয়।ফার্সী ভাষায় তালিবান অর্থ হল বহু ছাত্র।এই কথাটি পশতু ভাষায় ব্যবহৃত হয়।বহু ছাত্রের প্রতিশব্দ হল তালেবুন,তালেবীন।কুরআনিক মাদ্রাসায় তালিবান প্রাথমিক কোর্সমাত্র ২২ মাসের জন্য।তালেবান মাদ্রাসাসমূহ পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়।অতঃপর তা কান্দাহার,হেলমন্দ,পাটিকা,খোস্ত প্রভৃতি অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তাদের জনপ্রিয়তা ব্যাপক হারে বৃদ্বি পায়।বিশেষ করে মুসলিম শরনার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্বি পেয়তে থাকে এই দলে। পাকিস্তানের বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা ফজলুর রহমান এবং জামিয়াতে-উলামা-ই-ইসলাম তাদের প্রতি ব্যাপকভাবে সমর্থন জ্ঞাপন করে।
তালেবানদের জন্ম
তালেবানগণ সর্বপ্রথম বিচ্ছিন্নভাবে তারা অন্যায়ের বিরুদ্বে আন্দোলন গড়ে তুলে।তারা প্রথমে সংঘবদ্ব ছিল না।তারা বিভিন্ন জায়গায় নারী ধর্ষণ,আফিম ব্যবসা,চাঁদাবাজী এবং লুন্ঠনবিরোধী অভিযান পরিচালনা করত যার ফলে সেখানকার লোকেরা তাদেরকে খুব পছন্দ করত।১৯৯৪ সালে ১০/১১ বার্ষিক পরীক্ষা সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে তাদের সংগঠনের প্রকাশ ঘটে।
সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ
১৯৯৪ সালে পাকিস্তানের কনভয় হেরাত শহর হয়ে যচ্ছিল।সেসময় একদল মুজাহিদ তা আটক করে।সেসময় কান্দাহারের শাসনকর্তা তার জন্য কিছুই করতে পারে নাই।তখন তালেবান বাহিনী সেই কনভয় উদ্বার করে এবং তাদের শংকামুক্ত করেন।আবার তারা সেই সময় ঐ স্বৈরাচারী শাসকের হাত থেকে দুইজন নারী উদ্বার করেন যাদের শ্লীলতার হানী ঘটানো হচ্ছিল।সেসময় থেকে তালেবানদের আত্মপ্রকাশ ঘটে।এবং সকলের কাছে তারা গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে।বিশেষ করে পাকিস্তান সরকার সেসময় তাদের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।সেই সময় থেকে পাকিস্তানের বেনজীর ভুট্টোর সরকার তাদেরকে রাইফেল, চীনা মিসাইল, ট্যাংক, কামান ও যুদ্ববিমান প্রদান করে তাদেরকে আরও শক্তিশালী করে তুলে। তারা মোল্লা উমারকে তাদের প্রধান নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে এবং তাদের প্রধান সেনাপতি হন নূর হাকমন।তাদের আরেকজন নেতা হলেন মোহাম্মদ রাব্বী।
তালেবানদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা
১৯৯৪ সালে তারা কান্দাহার শহর দখল করে নেয়।অতঃপর তারা দুরাহী শহর অতি সহজে দখল করে নেয়।তারা প্রথমে গুলবুদ্দিন হেকমাতিয়ার বাহিনীকে পরাস্ত করে তাদের দখলকৃত দেশসমূহ অধিকারভূক্ত করে নেয়।অতঃপর তারা ধীরে ধীরে কাবুলের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।অতঃপর সেসময়ের ক্ষমতাধর গোষ্ঠী আহমদ শাহ মাসুদ বাহিনীর কাছ থেকে তারা ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় এবং সেখানে তাদের আধিপাত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়।তালেবানগণ ১৯৯৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সমগ্র আফগানিস্তান দখল করে নেয়।আস্তে আস্তে করে তারা আফগানিস্তানের অধিকাংশ স্থান দখল করে নিতে থাকে।তাদের অধিকারভূক্ত জায়গার পরিমাণ ছিলে মোট আফগানিস্তানের ৯০ শতাংশ।বাকি অঞ্চলসমূহের নিয়ন্ত্রন থাকে রশী দোস্তাম এবং আহমদ শাহ মাসুদের অধীনে।দীর্ঘদিন পরে আফগানিস্তান ফিরে পায় তাদের সাধারণ জীবন-প্রণালী।তারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডাঃ নজিবুল্লাহকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
তালেবানদের ক্ষমতা দখলের কারণসমূহ
১. রব্বানী ও হেকমাতিয়ার বাহিনীর প্রতি অনাস্থা ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দুইটি প্রধান মুজাহিদদের গ্রুপ তথা গুলমউদ্দিন হেকমাতিয়ার এবং বুরহান উদ্দিন রব্বানী প্রায় ৩৫ হাজার আফগান জনগণ নিহত হয়।দেশের এক অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হয় এ গৃহযুদ্বের দরুন।দেশের সকল লোকালয়সমূহ একেবারে জনশূন্য হয়ে পড়েছিল।অতঃপর দেশের জনগণ এই দুটি দলের উপর তারা তিক্ত-বিরক্ত হয়ে অন্য একটি দলকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করল।এসময় তালিবান সরকার সকলের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়।
২. কনভয় উদ্বার এবং তরুনীকে রক্ষাঃ ১৯৯৪ সালে পাকিস্তানের কনভয় হেরাত শহর হয়ে যচ্ছিল।সেসময় একদল মুজাহিদ তা আটক করে।সেসময় কান্দাহারের শাসনকর্তা তার জন্য কিছুই করতে পারে নাই।তখন তালেবান বাহিনী সেই কনভয় উদ্বার করে এবং তাদের শংকামুক্ত করেন।আবার তারা সেই সময় ঐ স্বৈরাচারী শাসকের হাত থেকে দুইজন নারী উদ্বার করেন যাদের শ্লীলতার হানী ঘটানো হচ্ছিল।সেসময় থেকে তালেবানদের আত্মপ্রকাশ ঘটে।এবং সকলের কাছে তারা গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে।বিশেষ করে পাকিস্তান সরকার সেসময় তাদের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
৩. ইসলামী অনুশাসন পালনঃ ১৯৭৯ সালে থেকে শুরু করে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কমিউনিজম শাসন ব্যবস্থার জন্য আফগানী সৈন্যগণ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে থাকে।অন্যদিকে তালেবানগণ ছিলেন গোঁড়া ইসলামপন্থী।তারা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ইসলামের মর্মবাণী প্রচার করে মানুষের মন জয় করতে সক্ষম হন।
৪.মুসলিম বিশ্বের সাথে যোগসাজেশঃ  তালেবানদের প্রতি আফগান পার্শ্ববর্তী দেশ তথা পাকিস্তানের বেনজীর ভুট্টোর সরকারের ব্যাপক সমর্থন ছিল। ইতিঃপূর্বে কোন মুজাহিদ সংস্থাকে এরকমভাবে কোন রাষ্ট্র সাহায্য করে নাই।পাকিস্তান সরকার তাদেরকে লোকবল,অর্থবল,সামরিক অস্ত্র দান ইত্যাদির মাধ্যমে সাহায্য প্রদান করে যার দরুন তারা স্বল্প সময়ে একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত হয়।তাছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে বেশী তেলসমৃদ্ব দেশ সৌদি-আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদেরকে আর্থিকভাবে ব্যাপকভাবে সহায়তা প্রদান করে।
৫. আফগান প্রশাসনের দুর্নীতঃ  আফগান প্রশাসন ব্যাপকভাবে দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়া শুরু করে যার দরুন আফগান জনগণ প্রশাসনের প্রতি চরম বিরক্তি প্রকাশ করে।এমন অবস্থায় তালেবানগণ আফগান জনগণের মন জয় করতে সক্ষম হন।
৬. বিভিন্ন গোষ্ঠীর সাহায্যঃ  গুলবুদ্দিন হেকমাতিয়ার ছিলেন পশতু অন্যদিকে আহমদ শাহ মাসুদ ছিলেন তাজিক গোষ্ঠীভূক্ত।এক গোষ্ঠী অন্য গোষ্ঠীকে সহজে সহ্য করতে পারত না।কিন্তু তালেবানরা সকল গোষ্ঠীর সমন্বয় গঠিত ছিল যার ফলে তারা অতি সহজে সকলের মন জয় করতে সক্ষম হয়।
৭. আন্তর্জাতিক ইসলামী জঙ্গীর সহায়তাঃ উসামা বিন লাদেনের আল কায়দাসহ বিশ্বের সকল আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনসমূহ তালেবানসহ তাদেরকে অস্ত্র সরবারাহ এবং অর্থের মাধ্যমে সাহায্য প্রদান করে।
তালেবানদের কার্যক্রম
তারা মজলিশে শুরা প্রতিষ্ঠা করে তাদের শাসন কার্যক্রম পরিচালনা করত।তারা খুলাফায়ে রাশেদীনের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে তাদের শাসন কার্যক্রম পরিচালনা করত।তাদের মূল লক্ষ্য ছিল দেশে ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করা।তারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে শরীয়া আইন জারী করে।তারা মোল্লা উমারকে আমীরুল মুমিনীন হিসেবে নির্বাচিত করে।তাদের কার্যক্রমের একটি নমুনা নিম্নে দেওয়া হলঃ
 ১. শরীয়া আইন প্রতিষ্ঠা করা হয় যার দ্বারা চুরির দ্বারা হাত কাটা,ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে রজম করা এবং হত্যার জন্য কিসাসের বিধান প্রণয়ন করে।
২. তারা সকল বিদ্যালয়,কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলম করে দেয়।
৩. তারা সকল পুরুষদের জন্য দাড়ি রাখা বাধ্যতামূলক করে দেয়।
৪. তারা নারী শিক্ষাকে নিষিদ্ব ঘোষণা করে দেয়।নারীদের কর্মক্ষেত্র থেকে ছাটাই করে।
৫. তারা নারীদের পর্দার ব্যাপারে অতিরিক্ত কড়াকড়ি আরোপ করে।
৬. তারা টিয়া পাখি পালন করা নিষিদ্ব করে দেয়
৭. তারা ঘুরি উড়ানোকে নিষিদ্ব করে দেয়
৮. তারা আফগানিস্তান থেকে টেলিভিশন,গান-বাজনা,নৃত্য ইত্যাদির ব্যাপারে নিষিদ্ব আনয়ণ করে।
৯. প্রকাশ্যে ধূমপান তারা নিষিদ্ব ঘোষণা করে।
তালেবানদের সাথে বহিঃবিশ্বের সম্পর্কঃ
তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।তাদের প্রতিক্রিয়া ছিল নিম্নরুপঃ
১. পার্শ্ববর্তী দেশ ইরান হল শিয়া প্রধান দেশ।তারা গোঁড়া সুন্নীদের এই আবির্ভাবকে সুনজরে দেখতে পারে নাই।
২. রাশিয়া তালেবানদের উত্থানে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে।তারা বুরহানুদ্দীন রব্বানীকে স্বাগত জানায়।
৩. তাজাকিস্তান,উজবেকিস্তান ও তুর্কেমিনিস্তান এসকল দেশসমূহ আশংকা করতে থাকে যে্‌, তাদের নিজ নিজ দেশের সকল ইসলামী দলসমূহ তালেবানদের দ্বারা উজ্জীবিত হয়ে তাদের বিরুদ্বে আন্দোলন পরিচালনা করছে।তাই তারা তালেবান সরকারকে কিছুতেই মেনে নিতে পার নাই।
৪. যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের পরোক্ষভাবে মদদ দিলেও তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে।
৫. পাকিস্তান তাদের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে ২৫ শে মে,১৯৯৭ সালে।
৬. সৌদি আরব ২৬ মে ১৯৯৭ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত ২৭ মে ১৯৯৭ সালে তাদের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
৭. জাতিসংঘ এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করে।
তালেবানদের পতন
তালেবান সরকার সমগ্র আফগানিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর জাতিসংঘ বিরোধীদের সাথে তালিবানদের শান্তি স্থাপনের প্রস্তাব দেয়।এ ব্যাপারে রোমে অবস্থানরত সাবেক আফগান বাদশাহ জহির শাহ এক নতুন প্রস্তাব দিলে তারা তা প্রত্যাখান করে এবং এর মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ তাদের ব্যাপারে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।তালেবানরা একেবারে একা হয়ে পড়ে।এছাড়া তালেবান সরকারের পতনের প্রধান প্রধান কারণসমূহ নিম্নরুপঃ
তালেবানদের পতনের কারণসমূহ
১. ধর্মীয় গোঁড়ামীঃ বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ নারী-পুরুষ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার দরুন তাদের অনেকেই তালেবানদের এই কঠোর ধর্মীয় অনুশাসন মানতে নারাজ ছিল।তাই তাদের অনেকে এই সরকারের পতন কামনা করছিল।
২. বহিঃবিশ্বের কাছ থেকে সমর্থন হারানোঃ  তালিবানগণ যখন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় তখন তারা একে একে করে বিশ্বের সকল দেশের কাছ থেকে সমর্থন হারাতে থাকে।তাদেরকে কোন দেশ আনুষ্ঠানিভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে নাই।এমন কি জাতিসঙ্ঘ তাদের সদর দফতর ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উঠিয়ে ফেলে।   
৩. অর্থনৈতিক মন্দা ও বেকারত্ব বৃদ্বিঃ তালেবানী শাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে সারা বিশ্বের সাহায্য আফগান সরকারের প্রতি কমতে থাকে।তাছাড়া তারা যখন আফিম চাষ নিষিদ্ব ঘোষণা করে তখন আফানিস্তানে বেকারত্বের হার বৃদ্বি পেতে থাকে।আরও বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য ও পেশা যখন নিষিদ্ব ঘোষণা করা হতে থাকে তখন ধীরে ধীরে আফগানিস্তানে বেকারত্বের হার বৃদ্বি পেতে থাকে এবং অর্থনৈতিক অবস্থার মন্দা ঘটতে থাকে যার দরুন তালেবান সরকার দ্রুত পতনের দিকে ধাবিত হতে থাকে।
৪. মূর্তির ধংস্ব সাধনঃ ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তালেবান সরকার কর্তৃক বৌদ্ব ধর্মের ঐতিহ্যবাহী মূর্তি ধংস্ব হওয়ার পর সারা বিশ্বজুড়ে এক বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় যার দরুন সারা বিশ্ববাসী এ সরকারকে উৎখাত করার চিন্তা-ভাবনা শুরু করে সেসময় থেক।
৫. পশ্চিমা বিশ্বের অপপ্রচারঃ আফগানিস্তানে তালেবান শাসন প্রতিষ্ঠা লাভ করার পর থেকে পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়াতে তাদের বিরুদ্বে অপপ্রচার শুরু করে।এজন্য তা আফগানিস্তানসহ বিশ্বের সকল মানুষের প্রতি এক বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
৬.অন্তর্দ্বন্দ্বঃ তালেবানদের সাথে অন্যান্য গোষ্ঠির অন্তর্দ্বন্দ্ব তালেবান সরকারকে দ্রুত পতনের দিকে ধাবিত করে।
৬. উসামা বিন লাদেনের প্রতি সমর্থনঃ তালেবান পতনের এটি হল প্রধান কারণ।৯/১১ এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার পর পর যুক্তরাষ্ট্রের বুশ প্রশাসন তাদের বিরুদ্বে অভিযান পরিচালনা করে এবং যুদ্বের এক মাসের মাথায় তারা পুরোপুরিভাবে বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
চূড়ান্তভাবে পতন
১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হামলার পর পর ৭ অক্টোবর,২০০১ এ আফগানিস্তানের উপর জঙ্গি বিমান নিয়ে হামলা চালায়।এক পর্যায়ে তারা বিধস্ত্ব হয়ে পড়ে।৯ নভেম্বর উত্তরাঞ্চলীট জোট বাহিনী মাজার-ই-শরীফ দখল  করে নেয়।অতঃপর ১৩ই নভেম্বর আফগান বাহিনী কাবূল দখল করে নিয়ে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়।৬-৭ ডিসেম্বরে কান্দাহার শহরের পতন ঘটলে তালেবান শাসনের অবসান এখানে ঘটে যায়।
উপসংহার

তালেবান শাসনের ইতিহাস স্বল্প হলেও আফগানিস্তানের ইতিহাস এই স্বল্প সময়ের শাসন হলেও তা এক সদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখে যা পরবর্তীতে আফগান জাতিকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করতে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

1 comment:

৩৮ তম বিসিএস এর রেজাল্ট

৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে পিএসসি। বাংলাদেশ কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক এ কথা নিশ্চিত করেন। ...