হায়াতুল ইগাসা
পরিচিতি
আন্তর্জাতিক ইসলামি ত্রাণ সংস্থা, (আরবী: هيئة الإغاثة الإسلامية العالمية, সৌদি আরব, IIRO এবং IIROSAএর আন্তর্জাতিক
ইসলামি ত্রাণ সংস্থা ), একটি দাতব্য সংস্থা যা সৌদি আরবকে ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়।
এইটি বেসরকারী সংস্থা অধিবেশনের একটি সদস্য, যেখানে বেসরকারী সংস্থা অধিবেশনে এটিকে
বোর্ডে সরবরাহ করে। আন্তর্জাতিক ইসলামি ত্রাণ সংস্থা UNHCR এর প্রধান বেসরকারী
প্রতিষ্ঠানের সঙ্গীর একটি তালিকাতে অন্তর্ভুক্ত
করা হয়, যেটি, রাজ্যয় " উল্লিখ অথবা UNHCR এর মধ্যে স্থগিতাদেশ
এর কোন দলীলে পাওয়া যায় না।ড. এশাম অমিশ এর ভাই মোহাম্মদ অমিশ , IIRO.এর যুক্তরাষ্ট্র
শাখার সভাপতি। জাতিসংঘ ইন্দোনেশিয়া এর শাখা দপ্তব়কে তালিকাভুক্ত করেছে।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
IIROSA হল Muslim World League(MWL) একটি আন্ত:সংস্থা
। একজন সৌদি রাজ বংশের সদস্য IIROSA সংগঠিত করতে
MWL এর সম্মেলনে
২৯ জানুয়ারি ১৯৭৯ চূড়ান্তভাবে আলোচনা করে তা অনুমোদন করেছিলেন।
এ সংস্থাটি “দাওয়াহ এবং ত্রাণ
আন্তর্জাতিক বিষয়ক ইসলামি পরিষদ” এর একটি সদস্য (IICDR), ও.আই.সি এ
সংস্থাটির পর্যবেশক্ষক হিসেবে কাজ করছে , UECOSOC এ সংস্থাটির
পরামর্শ বিষয়ক একটি পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করছে, ইসলামি শিক্ষা সংক্রান্ত, বৈজ্ঞানিক
এবং সাংস্কৃতিক সংস্থা (ISESCO) এর সাথে এদের সম্পর্ক রয়েছে এছাড়াও
অসংখ্য সংস্থার সাথে এদের ভিতর চুক্তিবদ্ব সম্পর্ক রয়েছে।
কার্যক্রম
হায়াতুল ইগাসা ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে আনুমানিক ৩.৬ কোটি ইস.এস ডলার ২২৫৮টি
প্রকল্পে ৮১টি দেশের সর্বমোট ৪, ৫৮৬, ০৮৫ গ্রাহকের জন্য খরচ করেছে।হায়াতুল ইগাসা সাতটি
প্রধান প্রোগ্রাম গ্রহন করেছিল ঐ সময় যা হল:
* সামাজিক কল্যাণ: ১.৩ কোটি ডলার।
* ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ: প্রায় ৭০ লক্ষ ডলার।
* সমাজ উন্নয়ন এবং ঋতু-ভিত্তিক
প্রকল্প: প্রায় ৬০ লক্ষ ডলার।
* জরুরী অবস্থা ত্রাণ: প্রায় ৪০ লক্ষ ডলার।
* স্বাস্থ্য যত্ন: ২০ লক্ষ ডলার।
* শিক্ষা সংক্রান্ত যত্ন: ২০ লক্ষ ডলার।
* হাফিজী কুরআন: ১০ লক্ষ ডলার।
এ সংস্থাটি বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা (WHO), জাতিসংঘের
আন্তর্জাতিক শিশু জরুরী বিষয়ক তহবিল, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী এবং UNHCR এর বেশ কিছু
প্রকল্পে কাজ করেছে।
২০০৫ সালে IIRO ইন্দোনেশিয়া,
শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এবং থাইল্যাণ্ডে ২০০৪ এর ২৬শে ডিসেম্বর ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ
সুনামি এবং ভূকম্পন আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ত্রাণ প্যাকেজের একটি সংখ্যা জোগান দিয়েছিল।
২০০৫ সালে IIRO পাকিস্তানের
ভূকম্পনের প্রভাবিত এলাকাতে বিশেষভাবে সাহায্য-সহায়তা ও জোগান দিয়েছিল এবং যে অঞ্চলটি
পুরোপুরিভাবে ধংস্ব,দুর্গমনীয় এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
সেবামূলক কার্যক্রমে হায়াতুল ইগাসা
২০১০ সালে আন্তর্জাতিক ইসলামি ত্রাণ সংস্থা সৌদি আরব(IIROSA) এর মহাসচিব ডঃ আদনান খলীল বাশা, , এবং অধ্যাপক Ekmeleddin
Ihasnoglu, ইসলামি অধিবেশনের সংস্থার (OIC)মহাসচিব জেদ্দাতে IIRO এর সদরে একটি
সহযোগিতামূলক চুক্তি সই করেছে। মুসলিম দেশগুলো,এর মধ্যে সহযোগিতা এবং ইসলামি ভ্রাতৃত্ব
সৃষ্টি করতে, বিশেষে এবং দাতব্য সংগঠন ও মানবিক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে এ চুক্তি
স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে উপস্থাপনা করা হয় যে ও.আ.সি এবং আই.আই.আর.ও একযোগে মুসলিম
দেশসমূহের অভাবী লোকদের পক্ষে কাজ করে যাবে। OIC দায়িত্বশীলার
সময় সমস্ত মানবিক প্রকল্প পরিচালনার মূল্য আই.আই.আর.ও প্রদান করবে বলে চুক্তি হয়।
আই.আই.আর.ও সৌদি আরবের জেদ্দায় অতিরিক্ত বৃষ্টি পড়া এবং বন্যার দ্বারা
ক্ষতিগ্রস্থের প্রায় ৫০০ বাড়ির মেরামত করতে,
শৌচাগার মেরামত করতে, আসবাবপত্রের সরবারাহ দ্বারা দুর্গতদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছে। তারা এসময় ৯০০ বিদেশীসহ শহরে প্রায় ২, ০০০ পুরুষ
এবং মহিলাদের অনাথদের সাহায্য করেছে। IIRO সৌদি আরবের ভেতরে
ত্রাণ সহায়তা ৯ কোটি রিয়েলের চেয়ে আরও বেশি খরচ করেছে যেটি পারিপাট্যহীন এবং অভাবী
লোকদের জন্য, ভবন মসজিদ, চিকিৎসা-শাস্ত্রগত বিস্তৃতিকরণ অনাথ এবং পারিপাট্যহীন ছাত্রদের খাদ্যবস্তু,পোষাক সমূহ এবং কম্বল সরবারাহ করতে, অন্তর্ভুক্ত করেছিল এবং রমজানের পবিত্র
মাসের সময় ইফতারের আয়োজনের
আন্তর্জাতিক ইসলামি ত্রাণ সংস্থা, সৌদি আরব (IIROSA) মরক্কোতে একটি
চিকিৎসা-শাস্ত্রগত শিবির আয়োজন করেছিল যেখানে সৌদি ডাক্তার শিশু open-heart শল্যবিদ্যা
কর্ম সম্পাদন করেছিল। বিশেষজ্ঞ কার্ডিও সার্জন ড. জামিল আতার এর নেতৃত্বদল গঠন করা
হয় যেখানে, জেদ্দাতে কিং আব্দুল আযীয বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল এবং কিং ফায়সাল বিশেষজ্ঞ
হাসপাতালে open-heart শল্যবিদ্যায় পারদর্শী একদল চিকিৎসকদলকে মরোক্কতে প্রেরণ করা হয়।
চIIROSA ২০০৯ সালের রমযান মাসে অত্যন্ত
সাফল্যের সাথে ৩১টি দেশে ইফতার সরবারাহ করতে সক্ষম হয়।
তাদের এই প্রকল্পের দ্বারা মুসলিম দেশের প্রায় ২৭৭৭৫টি পরিবার বিশেষভাবে
উপকৃত হয়। IIROSA এশিয়া এবং আফ্রিকার অধিকাংশ রাষ্ট্রে রমযান
মাসে পুষ্টিকর খাদ্য সরবারাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।
আন্তর্জাতিক ইসলামী ত্রাণ সংস্থা বিভিন্ন দেশের পানি সংকট নিরসনের লক্ষ্যে
তারা নাইজেরিয়া,নাইজার,ঘানা এবং ইয়ামেনসহ বিভিন্ন দেশে তারা অসংখ্য খাল এবং পুকুর খনন
করেছে।
সন্ত্রাসবাদের সাথে সম্পৃক্ততা
চস্টিভ এমারসন,রোহান গুনারাতনা এবং যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি
১২৬৭ সহ বেশ কতিপয় ব্যক্তি এবং সংস্থা দাবি করেছে যে আন্তর্জাতিক ইসলামী ত্রাণ সংস্থা
ইসলামী জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের সাথে সরাসরিভাবে জড়িত আছে। কোন কোন রিপোর্টে বলা
হয়েছে যে, মোহাম্মদ জামাল খলীফা যিনি উসামা বিন লাদেনের শ্যালক, এ সংস্থাটির ফিলিপাইন
শাখার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় ইসলামী জঙ্গী সংগঠন আবূ সায়েফ এবং এম.আই.এল.এফ
কে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছিল।
অপপ্রচার বন্ধে হায়াতুল ইগাসার ভূমিকাঃ
৯/১১ এর পর থেকে এই সংস্থাটি বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে থাকলে এই
সংস্থাটির মহাসচিব এ সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে বিভিন্নভাবে কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন।এ
সংস্থাটির পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট আইনজীবী মার্টিন ম্যাকমোহন কাজ করছেন।৯/১১
এর পর যুক্তরাষ্ট্রে সংস্থাটির শাখার প্রায় ৮০০জন বিভিন্ন ধরনের হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।তারা
এ কারণে সারাবিশ্বে এখন সুষ্ঠুভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। কিন্তু
সংস্থাটির মহাসচিব বরাবরই যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়টি অবহিত করেছে যে
তারা বিশ্বের বিভিন্ন দারিদ্যপীড়িত দেশ তাদের মানবতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে
সুষ্ঠুভাবে। ঐসকল দেশে তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকারের অভিযোগ প্রমাণিত হয় নাই।ফিলিপাইনে
জঙ্গি সহায়তার ব্যাপারে যে কথা বলা হয় তা গ্রহণ করতে রাজি নন এ সংস্থাটির মহাসচিব।তিনি
ব্যাখ্যা করেছেন যে, ফিলিপাইনে অবস্থিত মুসলিম জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা লাভ করার পূর্বে
তারা তাদের কার্যক্রম সেখান থেক উঠিয়ে ফেলেছে।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায় যে, ইসলামী বিশ্বের দরিদ্র লোকদের দারিদ্র্যতা বিমোচন,
অশিক্ষা দূরীকরণ ইত্যাদি বিষয় বর্তমান সময় এক বিশেষ ভূমিকা পালন করছে যা অন্যান্য দাতব্য
সংস্থার জন্য অনুসরণীয়।
No comments:
Post a Comment